যে সব বিক্রেতা ফর্মালিনে চোবানো মুরগি বিক্রি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে। পরীক্ষায় যদি দোষ প্রমাণিত হয়, তা হলে বাজেয়াপ্ত করা হবে সংশ্লিষ্ট দোকানের সমস্ত মালপত্র। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ।
প্রসঙ্গত, শহরে কোথায় কোথায় মরা মুরগি বিক্রি হচ্ছে তা দেখতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে পুর প্রশাসন। ফর্মালিনে চুবিয়ে মুরগি ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা জানতে শহরের একাধিক দোকান ও রেস্তরাঁয় হানা দিচ্ছে পুরসভার দল। বিভিন্ন বাজার থেকে মরা মুরগি উদ্ধার করা হচ্ছে। এ দিনও লেক মার্কেট, গড়িয়াহাট বাজার-সহ শহরের একাধিক বাজারে যান পুরকর্মীরা। মাংসের নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সচেতন করার জন্য প্রচারও চালান।
কিন্তু শুধু সচেতনতা-প্রচার চালিয়ে যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে না, তা আন্দাজ করে এ বার ওই বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ করতে চাইছে পুরসভা। এ দিন অতীনবাবু বলেন, ‘‘যাঁরা মরা মুরগি বিক্রি করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করা হবে। তাঁদের দোকানে যত মরা মুরগি আছে, ধ্বংস করা হবে। কারণ এটা চলতে দেওয়া যায় না। তবে সাধারণ মানুষের কাছেও আমার আবেদন, তাঁরা কী কিনছেন এবং খাচ্ছেন, সেটা যেন যাচাই করে নেন।’’
ইতিমধ্যেই যে সব দোকান থেকে মরা মুরগি উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলি পুর পরীক্ষাগার এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। আজ, শুক্রবার ওই পরীক্ষার প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অতীনবাবু। এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘শুক্রবার প্রাথমিক রিপোর্ট পাব বলে আশা করছি। তার পরেই বোঝা যাবে, সংগৃহীত নমুনার মধ্যে কোন কোন ব্যবসায়ী ফর্মালিনে চুবিয়ে মুরগি বিক্রি করছেন। সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।’’
তবে পুর প্রশাসনের তরফে যে ভাবে মরা মুরগির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্য পোলট্রি ফেডারেশন। সংগঠনের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই মরা মুরগি বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। একাধিক বার আলোচনা করেও লাভ হয়নি। আর সে কারণে ক্ষতি হচ্ছে সার্বিক মুরগি ব্যবসার।
তাই সংগঠনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কোনও সদস্য যদি কোথাও মরা মুরগি বিক্রির খবর পান, তা হলে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে। রাজ্য পোলট্রি ফেডারেশনের সম্পাদক মদন মাইতি বলেন, ‘‘সব সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মরা মুরগি বিক্রির বিষয়টি নজরে পড়লেই যেন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।’’