দখল: ফুটপাত আগলে চলছে ব্যবসা। ছবি: সুমন বল্লভ
রাস্তার দু’ধারে গজিয়ে উঠেছে একের পর এক লোভনীয় খাবারের দোকান। কোথাও বিক্রি হচ্ছে তৈরি খাবার, কোথাও আবার আগুন জ্বেলে রান্না চলছে। ফুটপাতের উপরেই চেয়ার-বেঞ্চ পেতে ক্রেতাদের বসিয়ে রীতিমতো রেস্তরাঁ গজিয়ে উঠেছে। এর জেরে ফুটপাত ছেড়ে রাস্তা দিয়েই হাঁটছেন পথচারী। এমনই ছবি দক্ষিণ কলকাতার লর্ডসের মোড়ের।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে ওই এলাকার এ ধরনের দোকানগুলিতে একাধিক বার আগুন লেগেছে। সাম্প্রতিক কালের মধ্যে শহরের বেশ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কথা মাথায় রেখে তাই সে দিকে নজর দেওয়ার কথা ভাবছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। এর পরেই দোকানগুলির পরিস্থিতি নিয়ে কলকাতা পুরসভা থেকে প্রশ্ন উঠেছিল। তখন স্থানীয় বরো কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, দোকানগুলির ট্রেড লাইসেন্স আছে কি না, তা সমীক্ষা করা হবে। না থাকলে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষ স্থির করেছেন, ওই সমীক্ষা ছাড়াও দোকানগুলির খাবারের গুণগত মান যাচাই করতে তা আতসকাচের নীচে ফেলা হবে।
ওই ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, এলাকায় আগুন লাগার পরে তাঁদের অনেকেই পুর কর্তৃপক্ষের কাছে লাইসেন্স জমা দিয়েছেন। ওই এলাকাটি ১০ নম্বর বরোর অন্তর্গত। বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘কয়েকটি দোকানের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা দ্রুত করতে শর্ত সাপেক্ষে নির্দেশ দেওয়া হয়, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাঁরা যাবতীয় ব্যবস্থা নেন। সেগুলি আদৌ হয়েছে কি না, তা জানতে এই অভিযান। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর থেকে ইতিমধ্যেই অভিযানের নির্দেশিকা পেয়েছি। মাসখানেকের মধ্যেই অভিযান শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।’’ তিনি জানান, পুরসভার খাদ্য দফতরের পর্যবেক্ষকেরা নমুনা পরীক্ষা করে মান খারাপ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
কলকাতা পুরসভার লাইসেন্স দফতরের এক আধিকারিক জানান, কিছু ব্যবসার ক্ষেত্রে শর্তানুযায়ী দমকলের অনুমতি আবশ্যক। বর্তমান আইন অনুযায়ী, যে সব ব্যবসায় আগুন লাগার আশঙ্কা রয়েছে, সেগুলি দমকল দেখবে। বাকিদের লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয় পুরসভাই দেখবে। তাঁর বক্তব্য, যেহেতু এখনও রাজ্য সরকারের থেকে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আসেনি, তাই পুরনো নিয়মেই দেখা হবে। এমনকি, দূষণের কথা ভেবে জ্বালানির দিকেও নজর রাখবেন পুর কর্তৃপক্ষ।