এখানেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অমিত দাসের।—ফাইল চিত্র।
বাতিস্তম্ভের একাংশ ভেঙে শিশুর মৃত্যুতে টনক নড়ল কলকাতা পুরসভার। শহরের বাতিস্তম্ভগুলির কী অবস্থা, তা নিয়ে আলো বিভাগকে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
গত সোমবার কলকাতা পুরসভার ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডের একবালপুরে ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পাঁচ বছরের অমিত দাসের। এলাকার বাতিস্তম্ভগুলির বেহাল দশা বলে স্থানীয়েরা অভিযোগ করেন। পরে এলাকার কাউন্সিলর নিজামুদ্দিন শামসও মানতে বাধ্য হন যে এলাকার বেশ কিছু বাতিস্তম্ভের দশা খারাপ।
সোমবার খুড়তুতো দিদির বিয়ে উপলক্ষে বাবা, মায়ের সঙ্গে বিহার থেকে একবালপুরে হোসেন শাহ রোডে কাকার বাড়িতে এসেছিল অমিত। পুলিশ জানায়, সে দিন দুপুরে খেলাধুলোর সময়ে তার মাথায় একটি বাতিস্তম্ভের একাংশ ভেঙে পড়ে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় ওই বালকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, মরচে ধরা ওই দুর্বল বাতিস্তম্ভের উপরে রঙের প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। যাতে তা নতুনের মতো থাকে। চকচক করে। কিন্তু এলাকার বাতিস্তম্ভগুলির হাল দেখলেই বোঝা যায় বেশ কয়েকটির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। দুর্ঘটনাও সেই কারণে।
এর পরেই শহরের বাতিস্তম্ভগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছিলেন পুরসভার আলো দফতরের মেয়র পারিষদ মনজ়ার ইকবাল। বুধবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুরকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘‘কলকাতার সব বাতিস্তম্ভ পরীক্ষা করতে বলুন। কোন ওয়ার্ডে পুরসভার কতগুলি বাতিস্তম্ভ রয়েছে তার হিসেব নিন। কোনটার হাল খারাপ তার তালিকা তৈরি করুন।’’ ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার দিকে নজর দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
পুরসভা সূত্রের খবর, খিদিরপুর এলাকার ৭৭ এবং ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন রাস্তার পাশে থাকা বাতিস্তম্ভগুলি আগেই পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। তবে মরচেই এক মাত্র কারণ নয় বলে দাবি আলো দফতের একাধিক কর্মীর। তাঁদের কথায়, ‘‘যে হারে বাতিস্তম্ভের উপরে কেবলের তার ঝোলানো বাড়ছে, তাতে তারের কুণ্ডলীর ভারে নুইয়ে পড়ছে অনেক বাতিস্তম্ভই। কাউকে কিছু বলা যাচ্ছে না।’’ অবশ্য মেয়র কাউকে রেয়াত না করার নির্দেশ দিয়েছেন। বাতিস্তম্ভে তার ঝুলে থাকলে তা কেটে ফেলতেও বলেছেন তিনি। যদিও স্থানীয় মহলের খবর, মাস কয়েক আগেও একটি বাতিস্তম্ভের একাংশ ভেঙে পড়েছিল। তাতে কোনও অঘটন ঘটেনি। তবে সেটি এখনও সেখানে পড়ে রয়েছে।
মেয়রের নির্দেশের পরে পরিস্থিতি পাল্টায় কি না সেটাই দেখার।