KMC

পরিদর্শন ছাড়াই ট্রেড লাইসেন্স, সিদ্ধান্তে বিতর্ক

সোমবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘ইজ় অব ডুয়িং বিজ়নেস’-এর কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৪৯
Share:

ফিরহাদ হাকিম।

ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার আগে আর পরিদর্শন করা হবে না। আবেদন করলেই মিলবে ট্রেড লাইসেন্স। পুরসভার কাছে যা ‘সার্টিফিকেট অব এনলিস্টমেন্ট’ (সি ই) বলে পরিচিত। কলকাতা পুরসভা এলাকায় এমনই নিয়ম চালু করতে চলেছে পুর প্রশাসন। সোমবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘ইজ় অব ডুয়িং বিজ়নেস’-এর কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাঁরা ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতে চান, তাঁদের সুবিধার কথা ভেবেই বর্তমান নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হচ্ছে। পুরসভা এ বিষয়ে বর্তমান আইনে কিছু সংশোধনী আনতে চলেছে বলেও জানান তিনি। এই সুবিধার সম্ভাব্য অপপ্রয়োগ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্কও।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, কেউ কলকাতায় ব্যবসা করতে চাইলে তাঁকে ‘সার্টিফিকেট অব এনলিস্টমেন্ট’-এর জন্য আবেদন করতে হয়। তবে লাইসেন্স বাবদ নির্দিষ্ট ফি জমা দেওয়ার আগে যে জায়গায় ওই ব্যবসা করা হবে, তা সরেজমিন দেখে নেন লাইসেন্স দফতরের ইনস্পেক্টরেরা। তাঁদের রিপোর্ট গ্রহণযোগ্য হলে তবেই ওই ব্যক্তি বা সংস্থাকে সি ই দেওয়া হয়। মেয়র জানান, কিছু কিছু
ক্ষেত্রে ‘ইনস্পেকশন রিপোর্ট’ দেওয়ার সময়ে পুরকর্মীদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। পুরসভা এই ইনস্পেক্টর-রাজ বন্ধ করতে চায়। যা ‘ইজ় অব ডুয়িং বিজ়নেস’-এর
অন্যতম লক্ষ্য।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যে কেউ আবেদন করলেই যদি লাইসেন্স পেয়ে যান, তা হলে সারদার মতো এক বাড়িতে শতাধিক ব্যবসা বা বেআইনি ব্যবসার হিড়িকও তো বেড়ে যেতে পারে? তাতে ইনস্পেক্টর-রাজের পরিবর্তে অন্য ধরনের বেআইনি কাজকর্মের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। কলকাতার মতো শহরে তা হওয়ার আশঙ্কাও প্রবল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ট্রেড লাইসেন্স দফতরের এক আধিকারিক তা মানছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু আগাম পরিদর্শনটাই হবে না। বাকি সবই এক থাকছে। পরিদর্শনের পরিবর্তে আবেদনের সঙ্গে একটি ‘সেল্ফ ডিক্লেরেশন’ দিতে হবে। সেখানেই সব তথ্য লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে আবেদনকারীকে। লাইসেন্স দেওয়ার পরে যে কোনও সময়ে পুরসভার পক্ষ থেকে তা যাচাই করে দেখা হবে।

Advertisement

কিন্তু কেন নিয়ম শিথিলের প্রয়োজন হল? এ ব্যাপারে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, বিশ্ব ব্যাঙ্কের বিধি মেনে ‘ইজ় অব ডুয়িং বিজ়নেস’ তালিকাভুক্ত শহরের মধ্যে কলকাতাও ঢুকেছে। সেখানে ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স-সহ একাধিক লাইসেন্স পাওয়ার
ক্ষেত্রে সরল পদ্ধতি চালু করার কথা বলা হয়েছে। দিল্লি ও মুম্বই পুর এলাকাতেও লাইসেন্স দেওয়ার আগে পরিদর্শন হয় না। সেখানে কী ভাবে কাজ হয়, তা দেখতে পুরসভার একাধিক অফিসারকে মুম্বই পাঠানো হয়েছিল। সেখানে বিশেষ কয়েকটি ব্যবসা ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার নিয়মে কোনও কড়াকড়ি নেই বলেই ফিরে এসে তাঁরা জানিয়েছেন। এমনকি পরিদর্শনও হয় না। কলকাতায় সেটাই চালু করা হবে।

পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র পরিষদ বৈঠক ও পুরসভার অধিবেশনে তা অনুমোদন করে পাঠানো হবে রাজ্য সরকারের কাছে আইন
সংশোধনের জন্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement