ফাইল চিত্র।
জঞ্জালের স্তূপ ঘেঁটে জীবিকা নির্বাহের দিন শেষ কুড়ানিদের। তাঁদের জন্য ধাপায় গড়ে তোলা হবে এক লক্ষ বর্গফুটের ছাউনি যুক্ত চাতাল। মুক্ত পরিবেশে সেখানে বসেই বাছাইয়ের কাজ করবেন তাঁরা। শনিবার এমনই নিদান দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর দাবি, ময়লা ঘাঁটার সেই দৃশ্য শুধু দেখতে খারাপ লাগে তা-ই নয়, তা পরিবেশে দূষণও ছড়ায়। পাশাপাশি যাঁরা এ কাজ করেন, তাঁদের স্বাস্থ্যের পক্ষেও তা অত্যন্ত ক্ষতিকর। যদিও সারা শহরে ছড়িয়ে থাকা খোলা ভ্যাট বন্ধ না করে এই ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হবে, সে নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
সম্প্রতি সি-৪০ বিশ্ব মেয়র সম্মেলনে যোগ দিতে ডেনমার্কে গিয়েছিলেন ফিরহাদ। পাশাপাশি ফ্রান্স, লন্ডন-সহ একাধিক শহর ঘুরে এসেছেন তিনি। পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন দেশের পুর প্রশাসন কী পদ্ধতিতে কাজ করছে, তা-ও প্রত্যক্ষ করে এসেছেন মেয়র। এ দিন তিনি জানান, প্লাস্টিক পরিবেশের বড় শত্রু। তাই প্রথমেই প্লাস্টিক নিয়ে কড়া হতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। প্লাস্টিক প্রস্তুতকারক সংগঠনের কর্তাদের মেয়র জানান, পাতলা প্লাস্টিক উৎপাদন একেবারে বন্ধ করতে হবে। মোটা প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যবহারের পরে প্লাস্টিকের বোতল এবং প্যাকেট নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা নিয়েও শহরবাসীকে সতর্ক করতে চায় পুর প্রশাসন। মেয়র জানান, প্লাস্টিকের প্যাকেট ও বোতল ফেলার জন্য সরকারি দফতর এবং জনবহুল বাজার এলাকাগুলিতে বিশেষ ধরনের বিন দেওয়া হবে। সেই বিনে জমা হওয়া প্যাকেট এবং বোতল যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সেখানেই গুঁড়ো করা হবে। যাতে তা কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যায়। প্লাস্টিক থেকে পেভার ব্লক বানানোর প্রকল্পও হাতে নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে জঞ্জাল দফতরের ডিজিকে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই জঞ্জাল থেকে সার তৈরির প্রকল্প শুরু করেছে পুর প্রশাসন। মেয়রের ওয়ার্ডে বিশেষ যন্ত্র বসিয়ে সেই কাজ চালুও হয়েছে। ওই ধরনের আরও ২০টি যন্ত্র শহরে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সে সব পুরোদমে কাজ শুরু করলে শহরের রাজপথের ধারে জমা জঞ্জালের বড় অংশ চাষের কাজে লেগে যাবে। ফলে পরিবেশও দূষণ থেকে বাঁচবে।
পুর ভবনে আয়োজিত এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুর কমিশনার, জঞ্জাল অপসারণ দফতরের ডিজি, প্লাস্টিক প্রস্তুতকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা। সেখানেই মেয়র জানান, কাগজকুড়ুনিদের সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে কাজ করতে সাহায্য করবে পুলিশ।