বর্ষাকালে পাম্পিং স্টেশনের পাইপের মুখে প্লাস্টিক আটকে গিয়ে প্রায়ই বিপত্তি ঘটে। যার জেরে জমা জল বার করার ক্ষেত্রে তৈরি হয় সমস্যা। কলকাতা পুরসভার পাম্পিং স্টেশনগুলিতে প্লাস্টিক তোলার ব্যবস্থা থাকলেও এই সমস্যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। পুর কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, নিকাশি নালায় ঢোকার আগেই যদি প্লাস্টিক আটকে দেওয়া যায়, তা হলে সমস্যা কমতে পারে। এ বার তাই গালিপিটের ঢাকনার নকশার পরিবর্তন করে নতুন ধরনের ঢাকনা ব্যবহার করতে চলেছেন তাঁরা। ওই ভাবেই প্লাস্টিক আটকানো যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা নিকাশি দফতরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তারক সিংহ বলেন, ‘‘নালার মুখেই প্লাস্টিককে আটকে দেওয়া গেলে সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। নিকাশির গালিপিট দিয়ে মাটি ছাড়াও প্লাস্টিক এবং কঠিন বর্জ্য ঢুকে ভাসতে ভাসতে পাম্পিং স্টেশনে এসে আটকে যায়। গালিপিটের ঢাকনা এমন ভাবে তৈরি করার পরিকল্পনা হয়েছে, যাতে প্লাস্টিক বা কঠিন বর্জ্য সেখান দিয়ে নিকাশি নালায় ঢুকতে না পারে।’’ তারকবাবু জানান, পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে নিকাশি দফতর থেকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তিনি রাজি হয়েছেন।
পুরসভার নিকাশি দফতরের এক আধিকারিক জানান, শহরে যে সমস্ত গালিপিট রয়েছে, সেগুলির ঢাকনা বেশ পুরনো। তাতে ফাঁক থাকার ফলেই এই সমস্যা হচ্ছে। ওই দফতর সূত্রের খবর, বৃষ্টির সময়ে পাম্পের পাইপে প্লাস্টিক আটকে গেলে পাম্প আর জল তুলতে পারে না। পাম্প তখন বিকল হয়ে যায়। সেই পাম্প সারিয়ে চালু করতে অনেক সময় লাগে। বর্ষার সময়ে পাম্প বিকল হওয়ার অন্যতম কারণই হল প্লাস্টিক। পুর আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, গত দু’মাসে পুরসভার মোট ৭৩টি পাম্পিং স্টেশন থেকে ১০০ টনেরও বেশি প্লাস্টিক তোলা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বামফ্রন্টের আমলে বিভিন্ন পাম্পিং স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্লাস্টিক সরানোর জন্য ‘অটো স্ক্রিনিং’ যন্ত্র কেনা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলির বেশির ভাগই বসানোর পরে খারাপ হয়ে যায়। বর্তমানে কয়েকটি মাত্র পাম্পিং স্টেশনেই ওই যন্ত্র সক্রিয় রয়েছে। বাকিগুলিতে নিকাশির মুখে প্লাস্টিকের জট ছাড়াতে ‘ম্যানুয়াল স্ক্রিনিং’ যন্ত্রই ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি নতুন ‘অটো স্ক্রিনিং’ যন্ত্র কেনার জন্য নিকাশি দফতর পুর কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছে।