প্রতীকী ছবি।
শহর জুড়ে ছড়ানো আবর্জনার ঠাঁই নিয়ে দোটানায় প্রশাসন। কারণ, উপচে উঠছে কলকাতার বৃহত্তম ভাগাড় ধাপা। তার বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে চলছে বিবিধ চিন্তাভাবনা। এরই মধ্যে জোর দেওয়া হচ্ছে বর্জ্য থেকে জৈব সার প্রস্তুতির প্রকল্পে। পরীক্ষামূলক ভাবে যা শুরু হয়েছে কলকাতা পুরসভার একটি ওয়ার্ডে। তা সফল হলে, পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওই প্রকল্প শুরু করা হবে।
বর্জ্য থেকে যন্ত্রের সাহায্যে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। কলকাতা পুরসভার বর্জ্য নিষ্কাশনে এ বার এই পদ্ধতি চালু করেছে পুরসভা। আপাতত ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত চেতলা মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় এই প্রকল্প শুরু হয়েছে। ওই বাজার এলাকায় প্রতিদিন জমা হচ্ছে আনাজ, ফলমূল-সহ জৈব বর্জ্য। পরে তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ‘অর্গানিক ওয়েস্ট কনভার্টার মেশিনে’। সেখানেই তৈরি হচ্ছে সার। পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, দৈনিক ৩০০ কিলোগ্রাম বর্জ্য থেকে সার তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে ওই মেশিনের। এই মুহূর্তে একটি ওয়ার্ডে ওই কাজ হলেও পরে তা আরও বাড়ানো হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতা শহরে দৈনিক সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য জমে। এর মধ্যে রয়েছে জৈব ও অজৈব বর্জ্য, মেডিক্যাল এবং ই-বর্জ্য। তবে জৈব বর্জ্যের পরিমাণ অনেকটাই। যা প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ধাপায় জমা হয়। জৈব বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন করে তা পুরসভার পার্ক এবং উদ্যানে ব্যবহার করার উদ্যোগ নেয় পুর প্রশাসন।
সেই মতো মাস খানেক আগে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কলকাতা পুরসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়।
পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের এক আধিকারিক জানান, মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ওয়ার্ড থেকে ওই প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। এর পর টালিনালার গতিপথের উপর দিয়ে আরও চারটি ওই বিশেষ যন্ত্র মেশিন বসানো হবে। টালিনালার পাশে অনেকেই নানা ধরনের বর্জ্য ফেলতে অভ্যস্ত। তাঁদেরকে সচেতন করার পাশাপাশি ওই নালাপথ যাতে সব সময় সাফ থাকে সে কারণে ওই বিশেষ যন্ত্র বসানো হবে। সেখানে আনাজ-সহ ফলমূল, মাছ মাংসের উচ্ছিষ্ট থেকে যন্ত্রের সাহায্যে সারে পরিণত করা হবে।
পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, কলকাতার ১৬টি বরো এলাকাতেই একটি করে বাজারের সামনে ওই যন্ত্র বসানো হবে। শহরে আরও ২৪টি যন্ত্র বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করা হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
যন্ত্র বসাতে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা করে খরচ হবে বলে জানা গিয়েছে। তা থেকে কত পরিমাণ সার উৎপাদন হতে পারে? জঞ্জাল অপসারণ দফতরের ওই আধিকারিক জানান, ৩০০ কিলোগ্রাম বর্জ্য থেকে প্রায় ৭৫-৮০ কিলোগ্রাম জৈব সার উৎপন্ন হচ্ছে। ওই সার চেতলা অঞ্চলের পুরসভার বিভিন্ন পার্ক এবং উদ্যানে গাছের জন্য দেওয়া হচ্ছে।