—প্রতীকী ছবি।
হকার সমীক্ষার কাজে গেলে পুরসভার কর্মী-আধিকারিকদের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভার শীর্ষ প্রশাসন। শুক্রবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ৩১ জুলাই, বুধবার বেহালার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে হকার সমীক্ষার কাজে গিয়ে এক তৃণমূল নেতার হাতে প্রহৃত হন কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক। পরে কলকাতা পুরসভার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নেতাকে গ্রেফতার করে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। সেই ঘটনার পরেই পরিস্থিতি নিয়ে কলকাতা পুরসভার সদর দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয় বোরো-১৪-র কমিটির। তার পরেই এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, সমীক্ষার কাজে গিয়ে পুর আধিকারিক ও কর্মীরা যাতে সমস্যার মুখে না পড়েন, সেই ভাবনা থেকেই পরিচয়পত্র নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শুধু বেহালা নয়, কলকাতা শহরের বেশ কিছু জায়গায় পরিচয়পত্র ছাড়া সমীক্ষার কাজে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন পুর আধিকারিক এবং কর্মীরা। আর বেহালার ঘটনা বড় আকার নেওয়ায় সমীক্ষার কাজে পরিচয়পত্র নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এমনিতেই পুর আধিকারিকেরা পুলিশের সহযোগিতায় প্রতিটি ওয়ার্ডে সমীক্ষার কাজ করছেন। তাই কলকাতা পুরসভার অনেক কর্মী-আধিকারিক পরিচয়পত্র সঙ্গে না নিয়ে কাজ করছিলেন। পর্ণশ্রীতে পুরসভার আধিকারিক সমীক্ষার কাজে গেলে পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় পুর আধিকারিকের চশমার কাচ ভেঙে যায়। ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা অভিজিৎ মৈত্র ওরফে পিকলুর বিরুদ্ধে পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। রাতেই গ্রেফতার হন তৃণমূল নেতা অভিজিৎ। কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে মারধর, কাজে বাধাদান-সহ একাধিক ধারায় মামলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম কড়া ভাষায় ঘটনার নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “যদি কেউ কলকাতা পুরসভার কোনও আধিকারিক বা কর্মীদের গায়ে হাত তোলে, তা আমার গায়ে হাত তোলার সমান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আইন সবার ঊর্ধ্বে। তাই এ ক্ষেত্রে আইন আইনের পথে চলবে।” মেয়রের এমন কড়া বিবৃতির পর মনে করা হচ্ছিল সমীক্ষার কাজে পুর আধিকারিক ও কর্মীদের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ করতে পারে কলকাতা পুরসভা। সেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সমীক্ষার কাজে পরিচয়পত্র রাখা বাধ্যতামূলক করা হল।
কলকাতা পুরসভা থেকে প্রকাশিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এখন থেকে পরিচয়পত্র ছাড়া কাজ করা যাবে না। সমীক্ষার কাজের সময় পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে সবাইকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর হাই পাওয়ার কমিটির নেতৃত্বে কলকাতার বাজারগুলি-সহ ৫৮টি গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিংয়ে হকার নিয়ন্ত্রণ এবং সার্ভের কাজ হয়েছে। এই কাজ পুরসভার সব ওয়ার্ডেই হচ্ছে। চলতি মাসে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়ে তা নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে জমা পড়ার কথা।