টেলিফোনে অভাব-অভিযোগ শুনছেন মেয়র। —নিজস্ব চিত্র।
এ যেন বাস্তবের ‘নায়ক’! ফোনে সরাসরি নাগরিকদের সমস্যার কথা শুনে চটজলদি সমাধানের নিদান দিচ্ছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম! এমন দৃশ্য অতীতে কখনও দেখেনি পুরসভা। পাক্কা এক ঘণ্টা পুর আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে নাগরিকদের সমস্যার কথা ফোনে শুনলেন তিনি। শুধু অভিযোগ শোনাই নয়, সঙ্গে সঙ্গে তা সমাধানের নির্দেশও দিলেন।
কেউ অভিযোগ করলেন রাস্তা নিয়ে। কেউ বেআইনি নির্মাণ, তো কেউ আবার পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে সরাসরি ফোনেই অভিযোগ করলেন মহানাগরিককে। যে দফতরের সমস্যা, সেই দফতরের আধিকারিকের নাম-ঠিকানা নিয়ে দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন ফিরহাদ। এ দৃশ্য দেখে পুর আধিকারিকদের মধ্য গুঞ্জন, এ তো দেখছি হিন্দি ‘নায়ক’ সিনেমার সেই অনিল কপূর। সাংবাদিক থেকে এক দিনের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেয়ে ঠিক এ ভাবেই নাগরিকদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন অভিনেতা। রিল আর রিয়্যাল যেন মিলে গেল।
সোমবার পুরসভার কনফারেন্স রুমে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারকে নিয়ে নাগরিকদের সমস্যা শুনতে বসেছিলেন মেয়র ফিরাদ হাকিম। দু’পাশে পুর আধিকারিকেরা খাতা-পেন নিয়ে তৈরি। মেয়রের সামনে টেলিফোন। তার পর পাক্কা এক ঘণ্টা অভিযোগ শুনলেন নাগরিকদের। এক দিনের জন্য নয়, এ বার থেকে প্রতি সপ্তাহে বুধবার করে তিনি কলকাতার নাগরিকদের সমস্যার কথা শুনবেন। মেয়রকে ফোন করার টোল ফ্রি নম্বর— ১৮০০৩৪৫১২১৩। শুধু তাই নয়, মেয়রের নির্দেশ, প্রতি দিন ১০০ জন নাগরিককে ফোন করে পুরকর্তাদের জানতে হবে, তাঁদের কী সমস্যা। ঠিক মতো নাগরিক পরিষেবা পাচ্ছেন কি না?
আরও পড়ুন: বিজেপি-কে বাড়তেই হবে: কেশব ভবনের ‘বেনোজলাতঙ্ক’ নস্যাৎ করে সাফ জানাচ্ছে নাগপুর
এ দিন যেমন বেহালার ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কমল সরকার ফোন করে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ করেন। মেয়র গোটা ঘাটনাটি শুনে ডিজি বিল্ডিংকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেন। ওই ওয়ার্ডের শ্যামলী পার্কের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ দিন ধরে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকলেও, তা পরিষ্কার করা হচ্ছে না। তা-ও গুরুত্ব সহকারে শোনেন মেয়র। এর পর ফোন আসে পাতিপুকুর থেকে। এক মহিলা পাতিপুকুর ব্রিজের নীচে জল জমার অভিযোগ করেন। মেয়র বলেন, ‘‘এটা দীর্ঘ দিনের সমস্যা। আমরা রেলের কাছে জমি চেয়েছি। পাম্পিং স্টেশন করে সেখানকার জল কী ভাবে সরিয়ে ফেলা যায় তা দেখছি।’’
আরও পড়ুন: ঋণে ডুবছে সংস্থা, মুম্বইয়ে ৭ লক্ষ বর্গফুটের হেড অফিস বেচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় অনিল অম্বানী
কলকাতা পুরসভার সংযুক্ত এলাকার ১৪২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ফোন করে মেয়রের কাছে ঘোলা পানীয় জল পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন এক জন। সঙ্গে সঙ্গে আধিকারিকদের বিষয়টি নোট নিতে বলেন ফিরহাদ। একই ভাবে শহরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেমন অভিযোগ এসেছে, তেমনই দ্রুত সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শুধু কলকাতা নয়, দিল্লি থেকেও কলকাতার এক বাসিন্দা ফোন করে নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিযোগ করেন। সে অভিযোগও শোনেন মেয়র।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।