ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল ছবি।
ভারী বৃষ্টিতে জমা জলের সমস্যার মধ্যে শহরের জরাজীর্ণ এবং বিপজ্জনক বাড়িগুলি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে কলকাতা পুরসভা। শনিবার কলকাতা পুরসভায় আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে সেই উদ্বেগ ধরা পড়েছে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কণ্ঠে।
বিপজ্জনক এবং জরাজীর্ণ বাড়ি নিয়ে মেয়রকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা শহরে জল জমার থেকে বড় সমস্যা হল বিপজ্জনক বাড়ি। প্রচুর সংখ্যায় পুরনো বাড়ি আছে। এখন প্রবল বৃষ্টিতে যে কোনও সময় পুরনো এবং বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভেঙে পড়তে পারে। আমরা সব জায়গায় নোটিশ দিয়ে দিয়েছি।’’ ফিরহাদ আরও বলেন, ‘‘সেই সব বাড়িতে যাঁরা থাকেন, তাঁদের বার বার বলা হচ্ছে, আপনারা বাড়ি খালি করুন। তাঁদের ইভ্যাকুয়েশন সার্টিফিকেট কলকাতা পুরসভা দিয়ে দেবে। তাতেও তাঁরা বিপজ্জনক বাড়ি ছাড়তে নারাজ। বাড়িটি ভাঙা হলে আপনাদের অধিকার যাতে বজায় থাকে, সে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। তার পরেও আমরা সে ভাবে সাড়া পাচ্ছি না। তাঁদের ভাবনা হচ্ছে, আজ যদি আমরা বাড়ি খালি করে দিই আর কাল যদি এই বাড়ির অধিকার না পাই,, তখন কী হবে?’’
মেয়র জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কলকাতা শহরে পুরনো বাড়ির সংখ্যা ১৫০০ থেকে ২০০০টি। আর এই পুরনো বাড়িগুলির মধ্যে 'অতিবিপজ্জনক' বাড়ির সংখ্যা ২০ থেকে ২৫টি। সেই বাড়িগুলির দিকে যে এই ভারী বর্ষার মরসুমে কলকাতা পুরসভার নজর রয়েছে, তা-ও বুঝিয়েছেন ফিরহাদ। তিনি বলেছেন, ‘‘কলকাতা পুরসভা তত ক্ষণ স্যাংশনই দেবে না, যেখানে আপনাদের অধিকার খণ্ডিত হবে। বাড়ি খালি করলে বাড়িওয়ালা বা ভাড়াটে, কারও অধিকার খর্ব হবে না। এর পরেও তাঁরা আশ্বস্ত হচ্ছেন না। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই সব বাড়িতে থেকে যাচ্ছেন।’’
বহু ক্ষেত্রেই পুরনো তথা জরাজীর্ণ বাড়িগুলির মালিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। সে প্রসঙ্গে মেয়রের বক্তব্য, ‘‘অনেক জায়গায় মালিক রয়েছেন। আবার এমন অনেক পুরনো বাড়ির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে বাড়ির মালিকের সংখ্যা একাধিক। তবে যে সব বাড়ি ভেঙে পড়ছে, সেই সব বাড়ি আমরা ভেঙে দেব। প্রয়োজনে সেই জমিতেই আমরা ঘর বানিয়ে দেব, যাতে সেখানে তাঁরা থাকতে পারেন।’’ তবে এই কাজে বাড়ির মালিকেরা এগিয়ে না আসায় যে কলকাতা পুরসভার অসুবিধা হচ্ছে, তা-ও স্বীকার করে নিয়েছেন মেয়র। তাঁর কথায়, ‘‘সম্পত্তির অধিকার সাংবিধানিক। আর পুরসভাকে সংবিধান মেনে চলতে হবে। আমি সংবিধানের শপথ নিয়েই এই চেয়ারে বসেছি। সংবিধান ভেঙে আমার পক্ষে কোনও কাজ করা সম্ভব নয়।’’