কলকাতা পুরসভা। ফাইল চিত্র।
খাস কলকাতায় বেড়েই চলেছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। চলতি বছরে কলকাতায় (শনিবার পর্যন্ত) ডেঙ্গিতে মোট আক্রান্ত ৬০৫২ জন। তার মধ্যে দক্ষিণের সাতটি বরোতেই আক্রান্ত ৪৬২৭ জন। অথচ ডেঙ্গি-সচেতনতায় এত দিন তৎপরতা চোখে পড়েনি কাউন্সিলরদের মধ্যে। তা নিয়ে অসন্তুষ্ট পুর কর্তৃপক্ষ।
পুর স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, উত্তরের তুলনায় দক্ষিণে পরিত্যক্ত ফাঁকা জমির সংখ্যা বেশি বলে সেখানে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। দক্ষিণে ডেঙ্গি-বৃদ্ধির কারণ হিসাবে ফাঁকা পরিত্যক্ত জমিকে দুষেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। পুরসভা সূত্রের খবর, উত্তর ও দক্ষিণে ফাঁকা জমির সংখ্যা যথাক্রমে ৩৮৩ এবং ৩০৩৮। দক্ষিণে পুকুর, নির্মীয়মাণ বাড়ি, নর্দমা বা পাতকুয়োর সংখ্যাও বেশি। পুর পতঙ্গবিদেরা জানাচ্ছেন, এই সমস্ত জায়গাতেই বংশবিস্তার করে এডিস ইজিপ্টাই মশা।
কলকাতায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু হওয়া ২২ জনের মধ্যে ১৯ জনই ৮ থেকে ১৪ নম্বর বরো এলাকার বাসিন্দা। চলতি বছরে দক্ষিণের ৮ থেকে ১৪ নম্বর বরো এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬২৭। ১২ নম্বর বরো এলাকার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। ৮ থেকে ১৪ নম্বর বরো এলাকার ৮১, ৮২, ৮৩, ৯২, ৯৩, ৯৯, ১০০, ১০১, ১০৫, ১০৬, ১০৭,১০৯, ১১৩, ১১৪, ১১৫, ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের ডেঙ্গি-পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
তবে ডেঙ্গি নিয়ে কাউন্সিলরদের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট কলকাতার ডেপুটি মেয়র তথা পুর স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। মাস তিনেক আগে ডেঙ্গি মোকাবিলায় হওয়া বৈঠকে কাউন্সিলরদের সতর্ক করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে মেয়র নিজের ওয়ার্ডে ডেঙ্গি-সচেতনতা প্রচারে হেঁটেছিলেন। তার পরেই দক্ষিণের কাউন্সিলরেরা রাস্তায় নামছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, তিন মাস আগেই এমন পদক্ষেপ করলে ডেঙ্গি-পরিস্থিতি এতটা উদ্বেগজনক হত না। কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক বলেন, ‘‘মশাবাহিত রোগ নিয়ে সচেতনতার প্রচার করা পুরসভার বছরভর কাজের মধ্যে পড়ে। চার মাস আগেই কেন কাউন্সিলরেরা রাস্তায় নামলেন না?’’ কাউন্সিলরদের কাজে খামতির কথা স্বীকার করেছেন অতীনও। তাঁর কথায়, ‘‘কাউন্সিলরদের বুঝিয়ে বলেছিলাম, কোন জায়গায় কাজ করতে হবে। মনে হচ্ছে, কোথাও নিশ্চয় খামতি ছিল।’’