বেআইনি: বাগবাজারে পুরসভার একটি টিবি হাসপাতাল চত্বরের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে বাড়ি (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র
পুরসভার নজরেই ছিল না যে তাদের হাসপাতাল চৌহদ্দির ভিতরে দিব্যি বাড়ি বানাচ্ছেন বাইরের কেউ! ইট, সিমেন্ট, বালি দিয়ে নির্মাণের কাজও চলছে প্রকাশ্যে। এ দিকে, পুর অফিসার এবং কর্মীদের আনাগোনা চলছে সেই হাসপাতালে। অথচ তাঁরা কেউ জানেনই না! এমন পরিস্থিতি বাগবাজারে ‘মায়ের বাড়ি’র কাছে পুরসভার একটি টিবি হাসপাতালের। শনিবার ওই ঘটনা নিয়ে জল্পনা চলে পুরমহলে। প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে তা সম্ভব হল? কেনই বা পুর প্রশাসন বা পুলিশের নজর এড়াল?
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই টিবি হাসপাতাল পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের অধীন। তবে নির্মাণ কাজ দেখভাল করে পুরসভারই ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর। বিষয়টি নজরে না পড়া নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক অফিসারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। পরে ওই দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র অতীনবাবু পুরো বিষয়টির খোঁজ নিয়ে বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে ওই নির্মাণ চলছে। বরোর এগজিকিউটিভ হেল্থ অফিসার পরিদর্শন করেছেন। তাঁকে বলেছি, ওই নির্মাণ কাজ যিনি করছেন তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে।’’ অতীনবাবু জানান, পুরসভার জমিতে ওই কাজ কী করে হল, কারাই বা মদত দিয়েছেন তা দেখবে পুর প্রশাসন। অভিযুক্তের কড়া শাস্তি হওয়া দরকার।
এমনিতেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুরসভার পড়ে থাকা জমি দখল হয়ে যাওয়ার একাধিক অভিযোগ আসে পুর ভবনে। সেগুলি ফাঁকা জায়গায় পড়ে থাকায় এমন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় পুর প্রশাসনকে। কিন্তু হাসপাতালের ভিতরে স্টাফ কোয়ার্টার্সের পাশে ফাঁকা জায়গায় বাড়ি বানানোর সাহস হল কী করে, প্রশ্ন সেখানেই। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই নির্মাণ হচ্ছে একটি কোয়ার্টার্সের পাশে। সেখানে পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের এক কর্মী থাকেন। তাঁর কোনও আত্মীয় ওই কাজে যুক্ত বলে অতীনবাবুর কাছে অভিযোগ এসেছে।
অতীনবাবু জানান, ওই বরো থেকে তাঁকে বলা হয়েছে, ওখানে নির্মাণ করতে চেয়ে একটি আবেদন পড়েছিল হেল্থ অফিসারের কাছে। কার অনুমোদনে আবেদনপত্রটি ওই অফিসারের কাছে এসেছিল, তা দেখা হচ্ছে। যদিও বরো এগজিকিউটিভ হেল্থ অফিসার তাঁকে জানিয়েছিলেন, নির্মাণের বিষয়টি দেখে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর। তাই অনুমতি নিতে হবে ওই দফতর থেকেই। ডেপুটি মেয়রের দাবি, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কারও অনুমতি ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছে। শুধু পুলিশে অভিযোগই নয়, নির্মাণটি দ্রুত ভেঙে দেওয়ার জন্য বিল্ডিং বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, অভিযুক্তের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ।