বিগত কয়েকটি ঘূর্ণঝড়ে শহরে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়েছিল। ফাইল চিত্র।
গত কয়েক বছর ধরেই মে মাসে রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে। চলতি মাসেও তেমনই একটি ঝড়ের সতর্কবার্তা দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। যদিও এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবু দুর্যোগ সামলাতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের। ঝড়ের প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার নবান্নে জরুরি বৈঠক করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার এবং পুরসভার ডিজি (সিভিল) পি কে দুয়া।
এর পরেই দুর্যোগ সামলানোর প্রস্তুতিতে তৎপর হয় পুর প্রশাসন। শহরের খালগুলির অবস্থা জানতে বৃহস্পতিবার পুর ভবনে পুরসভা, সেচ দফতর এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিধানসভার পুর ও নগরোন্নয়ন সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। এ দিনই কমিটির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সদস্যেরা একাধিক খাল পরিদর্শন করেন। তাপস বলেন, ‘‘একাধিক খালে কাজ চলছে। কয়েকটি খালের কাজ বাকি। বর্ষার আগে যাতে শহরের সব খাল সংস্কার শেষ করা যায়, সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কমিটিকে রিপোর্ট দেব।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা ভেবে নিকাশি দফতর ছাড়াও উদ্যান, বিদ্যুৎ এবং জঞ্জাল অপসারণ দফতরকে আগেভাগে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে গাছ পড়লে তা দ্রুত সরাতে বরোভিত্তিক দল গড়া হচ্ছে। পুরসভার কন্ট্রোল রুমে শীর্ষ আধিকারিকেরাও উপস্থিত থাকবেন ২৪ ঘণ্টা। বিপর্যয় মোকাবিলায় সিইএসসি-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে কলকাতা পুরসভা।
পুরসভার নিকাশি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর এলাকায় ৭৬টি নিকাশি পাম্পিং স্টেশন রয়েছে। সেই সব পাম্পিং স্টেশন মিলিয়ে মোট ৪০৮টি পাম্প রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯২টি পাম্প বর্তমানে সক্রিয়। সমস্ত পাম্প যাতে চালু রাখা যায়, সে বিষয়ে দফতরকে জানানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন গালিপিটে যাতে আবর্জনা জমে না থাকে, সেই বিষয়েও জঞ্জাল অপসারণ দফতরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নিকাশি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রবল বৃষ্টির পরে বহু সময়ে গালিপিটের মুখে ময়লা জমে থাকায় বৃষ্টির জল বেরোতে বাধা পায়। এ ক্ষেত্রে গালিপিটের মুখ পরিষ্কার থাকলে জল দ্রুত বেরোবে।’’
উদ্যান দফতর সূত্রের খবর, ঝড়বৃষ্টিতে শহরের রাস্তায় পড়ে থাকা গাছ দ্রুত সরাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক গাছ কাটার করাত মজুত রাখা হয়েছে। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই মে মাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে। সেই মতো পুরসভার তরফে সমস্ত দফতরকে আগাম সতর্কমূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’
মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ এ দিন বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই মেয়রের নির্দেশে নিকাশি দফতর দুর্যোগ মোকাবিলায় সব রকমের প্রস্তুতি নিয়েছে। সমস্ত পাম্পিং স্টেশন সচল রাখতে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলছে।’’