—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
হকারদের অনেকে নিজের ডালা অন্যকে ভাড়া দেন বলে আগেই অভিযোগ উঠেছে। এক জন হকারের নামে একাধিক জায়গায় ডালা রয়েছে, এমন অভিযোগও পাওয়া গিয়েছে। কলকাতা শহরে হকার-রাজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন করে হকার-সমীক্ষার কাজ শুরু করতে ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক, অরূপ বিশ্বাস, অতীন ঘোষ ও দেবাশিস কুমারকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটি কমিটি গঠন করেছেন। শুক্রবার কমিটির সদস্যেরা পুরভবনে বৈঠক করেন। পরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘ডালা ভাড়া দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। হকারদের মনে রাখতে হবে, তাঁরা সরকারি জমিতে হকারি করেন। দিনভর পরিশ্রম করে যাঁরা হকারি করবেন, একমাত্র তাঁদের নামেই জায়গা বরাদ্দ হবে। হকারদের চিহ্নিতকরণে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো অ্যাপ তৈরি হচ্ছে। তাতে হকারদের ছবি ও আধার কার্ডের তথ্য থাকবে। পুরসভা পরিদর্শন করে যাচাই করবে, অ্যাপের ছবি সংশ্লিষ্ট হকারেরই কি না। এর অন্যথা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি এ দিনের বৈঠকে ছিলেন নগরপাল বিনীত গোয়েল, পুর ও নগরোন্নয়ন সচিব বিনোদ কুমার, পুর কমিশনার ধবল জৈন ও একাধিক পুলিশকর্তা। পরে মেয়র বলেন, ‘‘শুক্রবার গড়িয়াহাটে হকার-সমীক্ষা শুরু হয়েছে। সোমবার নিউ মার্কেটে শুরু হবে। ২০১৫ সালের হকার-সমীক্ষার রিপোর্টের সঙ্গে এখনকার রিপোর্ট মিলিয়ে দেখা হবে। আগের রিপোর্টে নাম থাকা কোনও হকারের যদি এ বারের রিপোর্টে নাম না থাকে, তা হলে আমরা তাঁর সম্পর্কে খোঁজ নেব। নিউ মার্কেট, হাতিবাগান, গড়িয়াহাটে সমীক্ষার কাজ শেষ হলে আগের ও পরের রিপোর্ট মিলিয়ে দেখা হবে। এক মাস পরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট জমা দেব।’’
মেয়র আরও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শহরে বহুতল পার্কিং লট তৈরি করতে জায়গা খোঁজা হচ্ছে। কোথায় গাড়ি রাখা যাবে আর কোথায় ‘নো পার্কিং’, পুরসভার তরফে গ্লো-সাইনবোর্ডে তা লেখা থাকবে।’’ ‘পার্কিং-মাফিয়াদের’ ঠেকাতেই পুরসভা এই ব্যবস্থা নেবে। প্রসঙ্গত, বেআইনি পার্কিং ঠেকাতে বছর দেড়েক আগে পুরসভার তরফে অনলাইনে পার্কিং-ফি জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হলেও এখনও শহরে তা কার্যকর হয়নি। সূত্রের খবর, আগামী এক মাসের মধ্যেই ই-পস যন্ত্রের মাধ্যমে শহরের সমস্ত পার্কিং লটে অনলাইনে ফি নেওয়া শুরু হবে।
গড়িয়াহাটে হকারদের বসার জন্য নির্দিষ্ট স্টলের ব্যবস্থা করেছে পুরসভা। এ দিন মেয়র জানান, অন্যান্য এলাকার ফুটপাতেও এই ধরনের স্টল থাকবে। স্টলের পিছনে শিল্পকলার ছবি থাকবে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী শহরের বিভিন্ন জায়গায় হকারদের সামগ্রী রাখার জন্য গুদাম তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে মেয়র জানান, গড়িয়াহাট ও বেহালায় গুদামের জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। দু’-তিন মাসের মধ্যে গুদামের নির্মাণকাজ শেষ হবে। তবে, হাতিবাগান ও নিউ মার্কেটে গুদামের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট ও হাতিবাগানে হকার-সমীক্ষার কাজ শেষ হলে শহরের অন্যান্য জায়গাতেও তা শুরু হবে বলে জানান মেয়র। এ দিন কমিটির সদস্যেরা নিউ মার্কেটের একাংশ ঘুরে দেখার পরে হকারদের নির্দিষ্ট জায়গায় বসে হকারি করতে আবেদন করেন।