গাঙ্গুলিবাগানে একটি কল থেকে নমুনা সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র
জন্ডিসের কারণ এলাকার পানীয় জলই। দক্ষিণ কলকাতার বাঘা যতীন সংলগ্ন বিদ্যাসাগর কলোনি, কেয়াবাগান এলাকায় জন্ডিসের প্রকোপের কারণ খুঁজতে গিয়ে এমনই রিপোর্ট পেয়েছে কলকাতা পুরসভা।
রাস্তার ধারের পুরসভার কল এবং কেনা বোতলের জল থেকে জন্ডিস ছড়িয়েছে দক্ষিণ কলকাতার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকটি জায়গায়। শনিবার এ কথা জানান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এ দিন আরও জানা গিয়েছে, ১০১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে একাধিক ব্যক্তির জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। আক্রান্তদের বাড়ি এবং এলাকায় পুরসভার কল থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন সেই রিপোর্ট জমা পড়ে মেয়রের কাছে। তা দেখেই তিনি জানান, ৯৯ নম্বর এলাকা থেকে ৩০ এবং ৩১ মে দু’দিন ধরে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যার পরীক্ষা হয়েছে পুরসভার পরীক্ষাগারে। মোট ২৭টি রিপোর্ট জমা পড়েছে। ১৮টি কলের মধ্যে ১০টি জলের নমুনায় কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া থাকার প্রমাণ মিলেছে। পুর চিকিৎসকেদের বক্তব্য, ওই ব্যাক্টিরিয়া থেকে জন্ডিস হতে পারে। পুরসভা সূত্রের খবর, রাস্তার ধারের ওই সব কল অবিলম্বে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। যে সব সংস্থার বোতলের জলে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া মেশার প্রমাণ মিলেছে, তাদেরকেও সতর্ক করা হবে।
এর পাশাপাশি, এ দিন ১০১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নতুন করে তিন জনের জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে পুরসভায়। ওই আক্রান্তদের বাড়ি থেকে শনিবার জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ১৯ জনের জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। সোমবার আরও জলের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। প্রতিটি এলাকাতেই পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর এবং জল সরবরাহ দফতরের কর্মীরা ঘুরছেন বলে জানান তিনি।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ওই এলাকায় বেশ কয়েক জন জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর। প্রথমে খবরটা জানা যায়নি। ভোট শেষ হতেই গত ২৪ মে তা কানে আসে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের। তিনিই ২৯ মে পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানান।
এ দিন মেয়র জানান, রামগড়, বিদ্যাসাগর কলোনির কিছু এলাকা থেকে জন্ডিসে সংক্রমণের খবর মিলেছে। ১৮টি কলের মধ্যে ১০টিতে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া পাওয়া গিয়েছে। বাকি নমুনাগুলি বিভিন্ন সংস্থার তৈরি ২০ লিটারের জলের জার ও স্থানীয় সরবরাহকারীদের জল থেকে নেওয়া। এলাকার নলকূপের জলও পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে তাতে কলিফর্ম মেলেনি। আপাতত, ওই এলাকায় যে সব জলের উৎস থেকে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া মিলেছে, সেগুলি সাময়িক বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জন্ডিসের প্রকোপ আর যাতে না বাড়ে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন মেয়র।