Dengue

ডেঙ্গি নিয়ে নভেম্বরেও সতর্ক থাকার কথা বলছে পুরসভা

গত চার দিনে কলকাতার ৯২ এবং ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুই তরুণ-তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ই এম বাইপাস সংলগ্ন ওয়ার্ড, বিশেষত কসবা এলাকায় ডেঙ্গি যথেষ্ট বাড়ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১৬
Share:

ফাইল চিত্র।

শহর কলকাতায় গত ছ’সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২৬৩, ৪৬৭, ৬২১, ৬৫৪, ৬০৬ ও ৫৯৬। শেষ দু’সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও তা নগণ্য। পাশাপাশি, ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় চিন্তিত কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘শীত না পড়লে ডেঙ্গি কমার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই। নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টি হলে নতুন করে মশার লার্ভা জন্মাবে। সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গিবাহী মশার দৌরাত্ম্য আরও বাড়তে পারে। নভেম্বর পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।’’

Advertisement

গত চার দিনে কলকাতার ৯২ এবং ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুই তরুণ-তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ই এম বাইপাস সংলগ্ন ওয়ার্ড, বিশেষত কসবা এলাকায় ডেঙ্গি যথেষ্ট বাড়ছে। ১২ নম্বর বরো এলাকার ১০৬, ১০৭, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড এখন চিন্তার কারণ। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কলকাতা পুর এলাকায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তিন জনের, ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জনের, ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জনের এবং ৯২ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পুরসভার চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই সব ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও সেই হার তেমন সন্তোষজনক নয়।

শুক্রবার রাতে ১১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব পুটিয়ারির শ্রীপল্লির বাসিন্দা এক তরুণের মৃত্যু হয়েছিল। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ওয়ার্ডের প্রায় প্রতিটি ঘরেই মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। বেশির ভাগেরই রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ছে। বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। কলকাতা পুরসভার ১০ থেকে ১৪ নম্বর বরোর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তুলনায় বেশি। ১০ নম্বর বরোর ৮১, ৯২, ৯৩, ৯৪, ৯৯ এবং ১০০ নম্বর ওয়ার্ড, ১১ নম্বর বরোর ১১২, ১১৩, ১১৪ নম্বর ওয়ার্ড, ১২ নম্বর বরোর অধীন ১০১, ১০৬, ১০৭ ও ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং ১৩ নম্বর বরো এলাকার ১১৫, ১১৭ ও ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গির দাপট বেশি। ১৪ নম্বর বরোয় বেহালার ১২১ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গি ছড়িয়েছে।

Advertisement

উত্তরের তুলনায় দক্ষিণে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। চলতি বছরে ১৪ জন মৃতের মধ্যে ১২ জনই দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। পুরসভার আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতির এই পার্থক্যের অন্যতম কারণ, দক্ষিণে শরিকি গোলমালের জেরে অনেক বাড়ির তালাবন্ধ হয়ে থাকা এবং ফাঁকা জমিতে জল ও আবর্জনা জমে ডেঙ্গিবাহী মশার জন্ম হওয়া। ফাঁকা জমি বা তালাবন্ধ বাড়ির মালিকদের নোটিস পাঠিয়েও কাজ হয় না বলে অভিযোগ।

শহরবাসীর বড় অংশেরই অভিযোগ, মশাবাহিত রোগ দমনে কলকাতা পুরসভার নিজস্ব ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগ থাকলেও তাদের গাফিলতিতেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। তবে অভিযোগ মানতে নারাজ মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ সচেতন না হলে মশাবাহিত রোগ নির্মূল করা মুশকিল। নাগরিকদের কাছে বিনীত আবেদন, নিজেদের বাড়ির ছাদ এবং সংলগ্ন এলাকাটুকু অন্তত পরিষ্কার রাখুন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement