রুদ্রনীল ঘোষ (বাঁ দিকে) ও প্রত্যুষ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ফাইল ছবি।
স্কুলে স্যর, ম্যাডামের বদলে দাদা-দিদি সম্বোধনেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডেকে থাকে পড়ুয়ারা। প্রথাগত শাসনের আবহ থেকে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক যেন অনেক কাছের এখানে। সেই স্কুল থেকেই এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার মেধা তালিকায় নবম ও দশম স্থানে রয়েছে দুই ছাত্র। শুক্রবার স্কুলে তাই খুশির জোয়ার। তাতে শামিল শিক্ষক থেকে পড়ুয়া— সকলেই।
এই ছবি দমদম কিশোর ভারতী হাইস্কুলের। এ দিন মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল ঘোষণার পরে দেখা যায়, নবম স্থানে রয়েছে রুদ্রনীল ঘোষ। আর প্রত্যুষ চট্টোপাধ্যায় জায়গা করে নিয়েছে দশম স্থানে। দুপুরে স্কুলে তাদের নিয়ে উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। দুই বন্ধুর মুখে অবশ্য এক কথা— ভাল ফলের আশা করেছিল তারা। কিন্তু, রাজ্যের মেধা তালিকার মধ্যে স্থান করে নেবে, তেমনটা ভাবেনি। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্যই এই সাফল্য বলে জানাল দুই পড়ুয়া।
রুদ্রনীলের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪। অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞান, জীবনবিজ্ঞান এবং ভূগোলে ১০০ করে, বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে এবং ইতিহাসে ৯৪ করে পেয়েছে সে। প্রত্যুষের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৩। অঙ্ক, পদার্থবিজ্ঞান এবং ভূগোলে সে পেয়েছে ৯৯, জীবনবিজ্ঞানে ১০০, বাংলায় ৯৩, ইংরেজিতে ৯৬ এবং ইতিহাসে ৯৭।
দমদম কিশোর ভারতী হাইস্কুল থেকে এ বার মোট ৮৫ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। সকলেই উত্তীর্ণ হয়েছে। ১১ জন ৯০ শতাংশের বেশি এবং ১৮ জন ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পিন্টু সরকার বলেন, ‘‘আগে একাধিক বার সাফল্য এসেছে। তবে মেধা তালিকায় প্রথম ১০ জনের মধ্যে দু’জন পড়ুয়া স্থান পেয়েছে, আগে এমনটা হয়নি। এই সাফল্য আসলে ছাত্রদেরই কৃতিত্বে হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা সাধ্যমতো পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন।’’
প্রত্যুষের বাবা প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায় ফিজ়িয়োথেরাপিস্ট। মা দোলা চট্টোপাধ্যায় জানান, নিয়মিত পড়াশোনা এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় এই সাফল্য এসেছে। প্রত্যুষ জানাল, বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছে রয়েছে তার। ভবিষ্যতে গবেষণা করার ইচ্ছাও আছে।
দমদমের পি কে গুহ লেনের বাসিন্দা রুদ্রনীলের সাফল্যে আপ্লুত বাবা অরুণাভ এবং মা সোমা ঘোষ। শেয়ার জগতে কর্মরত অরুণাভ এবং তাঁর স্ত্রী জানান, ভাল ফলের আশা থাকলেও মেধা তালিকায় সন্তান স্থান পাবে, ভাবেননি তাঁরা। বিজ্ঞান নিয়ে পড়বে বলে জানায় রুদ্রনীলও।