খাগড়াগড় বিস্ফোরণের মূল চক্রী কওসর। —ফাইল চিত্র
প্রায় ৭ বছর আগের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডে মূল চক্রী জাইদুল ইসলাম ওরফে কওসর ওরফে বোমারু মিজানের সাজা ঘোষণা হল। বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা ২৯ বছরের কওসরকে বুধবার কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র বিশেষ আদালত।
এই নিয়ে খাগড়াগড় কাণ্ডে সাজা ঘোষণা হল মোট ৩১ জনের। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ), অস্ত্র আইন, বিদেশি আইনের মতো মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে কওসর। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ১২৫ (রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা), ইউএপিএ-র ১৬, ১৮ ও ২০ ধারা, অস্ত্র আইনের ২৫ নম্বর ধারা, এবং বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের হয়েছিল। এই সব মামলাতেই কওসরকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজার মেয়াদ শুনিয়েছে আদালত।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বর্ধমান শহর লাগোয়া খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে বোমা বাঁধার সময় বিস্ফোরণ হয়। দুই জঙ্গির মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় আরও এক জন। ওই ঘটনায় উঠে আসে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর নাম। ঘটনার তদন্ত করে এনআইএ। তদন্তে উঠে আসে, খাগড়াগড়ের মূল চক্রী এই কওসরের নাম।
তার পর থেকেই কওসরকে হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। জারি হয়েছিল ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিসও। তার মাথার দাম ঘোষণা করা হয় ৫ লক্ষ টাকা। আইএস-এর সঙ্গেও যোগ ছিল কওসরের। বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের সূত্র ধরে ফের তার খোঁজ শুরু হয়। অবশেষে ২০১৮ সালে বেঙ্গালুরু থেকে কওসরকে গ্রেফতার করে এনআইএ। সেখানে মুন্না নামে হকারের কাজ করছিল কওসর।
বাংলাদেশে ২০০৫ সালে বিস্ফোরণে মূল মাথা ছিল এই কওসর। পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছিল সে। খাগড়াগড়-কাণ্ডের কিছু দিন আগে, ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশ ভ্যানে হামলা চালিয়ে কওসরকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জেএমবি জঙ্গিরা। বাংলাদেশে কওসর বোমারু মিজান নামেই পরিচিত ছিল। খুলনার জামালপুরের মেলান্দহের বাসিন্দা তেজগাঁও পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র মিজান ওরফে কওসর বোমা ও বিস্ফোরক তৈরিতে অত্যন্ত দক্ষ বলেই গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে।