তৃষ্ণার্ত: ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীর হাতে হাতে ছাতা বিলোনোর ফাঁকে এক পুলিশকর্মীকে জল খাইয়ে দিচ্ছেন তাঁর সহকর্মী। বৃহস্পতিবার, ভিআইপি রোডের লেক টাউন মোড়ে। ছবি: সুমন বল্লভ।
বিধাননগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বৃহস্পতিবারই ছাড়িয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি। এই অবস্থায় প্রবল দহনের কথা মাথায় রেখে দৈনিক শ্রমিকদের কাজের সময়
দু’বেলায় ভাগ করে দিল বিধাননগর পুরসভা। পাশাপাশি, গরমে সুস্থ থাকতে এ দিন বিধাননগর কমিশনারেটের তরফে তাদের এলাকায় ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদেরও কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, রাজারহাটের পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও পঞ্চায়েত সমিতির তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সরকারি কাজে নিযুক্ত
শ্রমিকদের যেন প্রখর রোদে কাজ করানো না হয়।
বিধাননগরে এত দিন শ্রমিকদের কাজের সময় ছিল সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো। এ বার তার বদলে ভোর ৫টা থেকে বেলা ১১টা এবং বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজের সময় করা হয়েছে। এত দিন আবর্জনা সংগ্রহ ও মশা নিধনের কাজ সকালে একসঙ্গে চলত। এ বার থেকে সকালে জঞ্জাল সংগ্রহ ও রাতে মশা মারার কাজ চলবে বলে জানিয়েছে পুরসভা। মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী-সহ অন্য মেয়র পারিষদেরা এ দিন বৈঠকে ঠিক করেন, শ্রমিকদের কাজের সময় দু’ভাগে ভাগ করা হবে। আজ, শুক্রবার থেকেই দু’ভাগে তাঁদের কাজ করার কথা। কৃষ্ণা বলেন, ‘‘শ্রমিকদের ওআরএস এবং গ্লুকোজ দেওয়া হবে। এ বার নির্বাচন এসে যাওয়ায় পরিকল্পনায় একটু দেরি হয়েছে।’’ এ ছাড়া রোদ থেকে মাথা বাঁচাতে শ্রমিকদের টুপিও দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রবল গরমে সুস্থ থাকতে এ দিন বিধাননগর কমিশনারেটের তরফ থেকে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের বিশেষ কিট দেওয়া হয়। তাতে রয়েছে তোয়ালে, এনার্জি ড্রিঙ্ক, গ্লুকোজ, ছাতা, টুপি। বিধাননগরের নগরপাল গৌরব শর্মা সকলের হাতে কিট তুলে দেন। ট্র্যাফিকের সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে শুরু করে ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকদের চড়া রোদে একনাগাড়ে কাজ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, ট্র্যাফিকের সিভিক ভলান্টিয়ার, যাঁদের মোড়ে মোড়ে সারা ক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়, তাঁদের বলা হয়েছে নির্ধারিত সময় অন্তর পাঁচ মিনিট করে ছায়ায় এসে বিশ্রাম করতে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, তাতে যেন ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ ব্যাহত না হয়।
অন্য দিকে, রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতি জানিয়েছে, পুরসভার মতো পঞ্চায়েতে নিয়মিত ভাবে শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয় না। তবে ১০০ দিনের কাজ, রাস্তায় পিচ ফেলার মতো কাজের ক্ষেত্রে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে শ্রমিকদের প্রয়োজনের বেশি খাটানো না হয়। রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর বলেন, ‘‘গরমে রাস্তার পিচ গলে যাচ্ছে। কোনও শ্রমিক কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দায় ঠিকাদার সংস্থাকে নিতে হবে। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে শ্রমিকদের কাজের সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।’’