Kali Puja 2020

ঠেকে শিখে ‘দায়িত্ববোধের’ কালীপুজো

তাঁরা জানাচ্ছেন, কালীপুজোর মূল খরচ আলো, জলসা আর ভোগের। এর পরেই তালিকায় বিসর্জন আর ডেকরেটর্সের খরচ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২০ ০৩:২৬
Share:

ফাইল চিত্র।

কমানো হচ্ছে আলোর রোশনাই। ভোগের আয়োজনের পরিকল্পনাও বাদ। একে অপরকে টেক্কা দিয়ে নামী-দামি শিল্পীদের দিয়ে জলসাও বাতিল। দর্শক-শূন্য রাখার নির্দেশ আসবে ধরে নিয়ে প্রায় কোথাওই মণ্ডপের ভিতরে প্রবেশ করে প্রতিমা দর্শনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে না। করোনা আবহের দুর্গাপুজো থেকে খানিক ঠেকে শিখেই কালী বন্দনায় তৈরি হচ্ছে শহর।

Advertisement

তবে উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এ বার স্পনসরের অভাবে কালীপুজোর জৌলুস কমছে সব জায়গায়। আমহার্স্ট স্ট্রিট, কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটের নব যুবক সঙ্ঘের পুজো যা ফাটাকেষ্টর পুজো নামে পরিচিত, এ পর্যন্ত স্পনসর পায়নি। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা ধনঞ্জয় ধরের মন্তব্য, ‘‘বহু মানুষ কলকাতার কালীপুজো বলতে আমাদের পুজোই বোঝেন। এই ক্লাবের আসল নামটাই অনেকে জানেন না। করোনার জন্য পুজোর জৌলুস কমাতে হবে মানলাম। কিন্তু এত বড় পুজোও স্পনসর পাবে না!”

পুজোর আর এক উদ্যোক্তা প্রবন্ধ রায় (ফান্টা) আবার বললেন, “আমাদের চিন্তা প্রতিমার গলার মালা নিয়ে। হাজার হাজার লোক এসে লক্ষ লক্ষ টাকার ওই সব মালা পরান। এ বার করোনার মধ্যে সে সব হবে কী করে? পুলিশ কি আদৌ অনুমতি দেবে?” এ বার সেখানে জলসা ও ভোগের আয়োজন বাদ। মণ্ডপের উচ্চতাও কমতে পারে। মণ্ডপের গেট এমন ভাবে তৈরি হবে যাতে বাইরে থেকেই প্রতিমা দর্শন করা যায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু রাজ্য পুলিশের আইসি-র​

ফাটাকেষ্টর পুজোর একদা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আমহার্স্ট স্ট্রিটের সোমেন মিত্রের (ছোড়দা) পুজো। উদ্যোক্তা বাদল ভট্টাচার্য বলেন, “একে করোনা, তার মধ্যে সোমেন নেই। স্পনসর সংস্থাগুলিও খোঁজখবর নিচ্ছে না। ছোট করেই পুজো সারব। প্রতিমার দৈর্ঘ্যও চার ফুট কমিয়ে ফেলা হয়েছে।” সেই সঙ্গেই বাদলবাবুর সংযোজন, “আমাদের মণ্ডপ প্রথম থেকেই খোলামেলা। দুর্গাপুজো দেখে সে ভাবে কিছু বদল করার ব্যাপার নেই।”

উত্তর কলকাতার ৯৮ বছরের পুরনো পুজো বাগমারি সর্বজনীনের উদ্যোক্তা কিশোর ঘোষ যদিও জানালেন, দুর্গাপুজোর কড়াকড়ি দেখেই মণ্ডপ এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে, যাতে দূর থেকে প্রতিমা দর্শন করা যায়। ভোগের আয়োজন হচ্ছে না। কিশোরবাবু বলেন, “স্পনসর না থাকলেও কিছু শুভানুধ্যায়ীর সাহায্যে পুজো হয়ে যাবে।” একই দাবি দক্ষিণ কলকাতার চেতলা প্রদীপ সঙ্ঘ বা খিদিরপুর সর্বশ্রী সঙ্ঘের উদ্যোক্তাদেরও।

তাঁরা জানাচ্ছেন, কালীপুজোর মূল খরচ আলো, জলসা আর ভোগের। এর পরেই তালিকায় বিসর্জন আর ডেকরেটর্সের খরচ। দুর্গাপুজোর পরে কালীপুজোর জন্য ২০-৩০ শতাংশ বরাদ্দ রাখে স্পনসর সংস্থাগুলি। তাই স্পনসরের টাকা কম পেলেও কিছু ‘শুভানুধ্যায়ীর সাহায্যে’ এত দিন পুজোর জৌলুস ধরে রাখা যেত। এ বার জৌলুসের চেয়েও দায়িত্ব পালন জরুরি।

দমদম সেভেন ট্যাঙ্কসের পান্নালোক শ্যামাপুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা তথা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের দাবি, “এ বছর মুম্বইয়ের এক শিল্পীর গান করতে আসার কথা ছিল আমাদের পুজোয়। না করে দিয়েছি। ভোগও বাদ।” ৪৮ পল্লি যুবশ্রীর কালীপুজোর উদ্যোক্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায় আবার বললেন, “নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। আমি বুঝি কতটা দায়িত্ববোধের পরিচয় দেওয়া দরকার। এ বার কালীপুজো করব সেই দায়িত্ববোধ থেকেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement