Doctors Protest

দুর্গাপুজোর জন্য স্বাধীনতা সংগ্রাম তো প্রভাবিত হয়নি, ধর্নাস্থল থেকেই পুজো নিয়ে বার্তা জুনিয়র ডাক্তারদের

আরজি করের ঘটনার পর থেকে ৩৬ দিন অতিক্রান্ত। বিচারের দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। গত মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সোমবার ধর্নার সপ্তম দিন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৪৩
Share:

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন। ছবি: পিটিআই।

সাত দিন হয়ে গেল। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে এখনও ধর্নায় বসে রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সরকার পক্ষের সঙ্গে একাধিক বার আলোচনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েও তা ভেস্তে গিয়েছে। এক বার নবান্নে, এক বার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনের চৌকাঠ পর্যন্ত গিয়েও ফিরে এসেছেন ডাক্তারেরা।

Advertisement

সামনেই দুর্গাপুজো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা সম্প্রতি রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন উৎসবে ফেরার জন্য। সে প্রসঙ্গে ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের কথা স্মরণ করিয়ে সোমবার কিঞ্জল বলেন, “এমন নয় যে বাংলায় ২০০ বছর ধরে কোনও দুর্গাপুজো হয়নি। দুর্গাপুজো হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম তার জন্য প্রভাবিত হয়নি। স্বাধীনতাও এসেছিল। আমার মনে হয়, এ বারের পুজোও ঠিক সেই রকমই হবে।”

সোমবার সকালেই জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি কিঞ্জল নন্দ জানিয়েছেন, কালীঘাটের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত কোনও ইমেল তাঁরা পাননি সরকারের তরফে। যদি নতুন কোনও ইমেল আসে, তার পরই সে বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ জানাবে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট।

Advertisement

আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা ও সরকার পক্ষ— উভয়েই আলোচনা চাইছে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপেক্ষা করেছেন তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য। বাসে চেপে নবান্ন পর্যন্ত পৌঁছেও গিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদল। কিন্তু বৈঠক হয়নি। তার পরে একই পরিস্থিতি হয় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনেও। শর্তের জটে সে বারও ভেস্তে যায় বৈঠক। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে। পরে দ্বিপাক্ষিক ভিডিয়োগ্রাফির শর্ত রাখেন তাঁরা। কিন্তু সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, ভিডিয়োগ্রাফি সরকারের তরফে করা হবে। তবে এখনই সেই ভিডিয়ো দেওয়া হবে না ডাক্তারদের। আদালতের অনুমতি পেলে তার পরে দেওয়া হবে। তত ক্ষণ কোনও পক্ষই সেই ভিডিয়ো ব্যবহার করবে না। পরিবর্তে দু’পক্ষের সই-সহ ‘মিনিটস’ (আলোচনার সারসংক্ষেপ) দেওয়া হবে। তবে শুরুতে তাতেও রাজি ছিল না জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল।

শেষে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থেরা যখন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন জুনিয়র ডাক্তারেরা দাবি করেন, তাঁরা সরকারের শর্ত মতোই বৈঠকে রাজি। কিন্তু চন্দ্রিমা তাঁদের জানিয়ে দেন, তখন আর বৈঠক সম্ভব নয়। এর পর থেকে নতুন করে আর কোনও ইমেল জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে পৌঁছয়নি বলেই সোমবার দাবি করলেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার তথা অভিনেতা কিঞ্জল।

স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান নিয়ে কেউ কেউ কটাক্ষও করতে শুরু করেছেন। তাঁদের উদ্দেশেও বার্তা দেন কিঞ্জল। তিনি বলেন, “আমরা নাটক করব, ছবি আঁকব, নাচব, আন্দোলন করব। আমরা ন্যায়ের পথে আছি। আমরা কোনও মিথ্যা কথা বলছি না যে লুকিয়ে করব। আমাদের সৎ সাহস আছে। যা করব বুক বাজিয়ে করব।” এর পরই দৃশ্যত আক্ষেপ মিশ্রিত গলায় কিঞ্জল জানান, ডাক্তারদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাই ডাক্তারদের ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে কারও কিছু যায়-আসে না। তিনি বলেন, “আমরা ভোট দিই, কি না দিই— তাতে মনে হয় না কারও কিছু যায় আসে। বিশ্বাস করুন, আমরা ডাক্তারিই করতে চাই। আমরা প্রতিটি রোগীকে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। যত ক্ষণ শরীরে প্রাণ থাকবে, ডাক্তারিই করে যাব। নেতা-মন্ত্রী-রাজনীতি— এগুলি আমাদের মাথায় ঢোকে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement