সাংবাদিক বৈঠকে আন্দোলনকারীরা। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
দু’জন ‘কালপ্রিট’ গ্রেফতার হয়েছে। কেউ ছাড় পাবে না। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সেখানকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারির পর এমনটাই দাবি করলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নামঞ্চে ফিরে গিয়ে এ কথা জানান তাঁরা। তাঁদের আরও দাবি, কান টানলে মাথা আসে। এই নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্ট। সেখানে তারা প্রশ্ন তুলেছে, ‘‘এই অপ্রিয় সত্য বেরিয়ে আসার ভয়েই কি স্বচ্ছতায় অনীহা?’’
চিকিৎসকের খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় শনিবার রাতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন সন্দীপ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। এই প্রসঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘আমরা বিচার চেয়ে আসছিলাম, শনিবার গ্রেফতার হয়েছে দুটো কালপ্রিট। কোনও কালপ্রিট ছাড় পাবে না। সব কালপ্রিটকে জেলের ঘানি টানতে হবে।’’
অন্য এক আন্দোলনকারী চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমার বোন শান্তি পাচ্ছে একটু হলেও। আরও অনেকের দড়ি বাঁধা রয়েছে। বিচারের দাবিতে আমরা রাজপথে রয়েছি। রাজপথে থাকব।’’
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে এক চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। এই আবহে আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সন্দীপকে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরানোর দাবিতে তখন আন্দোলন শুরু করেন পড়ুয়ারা। আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদ থেকে সরানো হয় সন্দীপকে। এর পর আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। এ বার চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের মামলাতেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘একটা পুরস্কার পেলাম। সেই সন্দীপ ঘোষ ধরা পড়েছে। আমরা বার বার বলেছিলাম, ইনি সেই সন্দীপ ঘোষ, যিনি থ্রেট কালচারের মাথায় ছিলেন, দুর্নীতি করে গিয়েছিলেন। সিবিআই দেখিয়ে দিল।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমাদের বোনকে প্রতিষ্ঠান খুন করেছে। একটি ব্যক্তির দ্বারা এটা হতে পারে না। কান এসেছে। কান টানলে মাথাও আসবে।’’
সন্দীপের গ্রেফতারি নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছে পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্ট। তারা লিখেছে, ‘‘চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি। এই অপ্রিয় সত্য বেরিয়ে আসার ভয়েই কি স্বচ্ছতায় অনীহা?’’
প্রসঙ্গত, শনিবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে তাঁর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ছিল, বৈঠকের ‘লাইভ স্ট্রিমিং’-এর। তাঁদের বক্তব্য, স্বচ্ছতার কারণেই এই দাবি তুলেছেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্টের পোস্টে সেই প্রসঙ্গই উঠে এসেছে।