সোমবার রাতে ধর্মতলার অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন তনয়া পাঁজা। —নিজস্ব চিত্র।
অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করানো হল আর এক অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার তনয়া পাঁজাকে। সোমবার সকাল থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। তবু ‘আমরণ অনশন’ চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তনয়া। রাতে অনশন মঞ্চের পাশের শৌচালয়ে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যান কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ওই জুনিয়র ডাক্তার। তার পরে তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তনয়া কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি (নাক, কান, গলা সংক্রান্ত) বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, তনয়ার রক্তচাপ কমে ৮৬/৬২ হয়ে গিয়েছে। সোমবার রাতে কয়েক জন ধরে ধরে তাঁকে মঞ্চের কাছে শৌচালয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানেই তিনি মাথা ঘুরে পড়ে যান বলে খবর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
সোমবার সকালে তনয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের তরফে জানানো হয়, ঘন ঘন তাঁর মাথা ঘুরছিল। উঠে বসতে কষ্ট হচ্ছিল, মাথা ঘুরিয়ে উঠছিল। এমনকি, শুয়ে থাকলেও তাঁর মাথা ঘুরছিল। সম্প্রতি তাঁর যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, তনয়ার রক্তচাপ কমে হয়েছে ৯৮/৭০। তাঁর নাড়ির গতি ৭৮ এবং ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজ় (সিবিজি) ৬৩। মূত্রে কিটোন বডি বেড়েছে (৩+)। সোমবার সন্ধ্যায় রক্তচাপ আরও কমে যায়। চিকিৎসকেরা আগেই জানিয়েছিলেন, সিবিজি ৬০-এর নীচে নেমে গেলে তা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কিডনিও বিকল হয়ে যেতে পারে। সেই জায়গা থেকে স্বাভাবিক ভাবেই তনয়াকে নিয়ে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। যদিও তাঁকে চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিলেও হাসপাতালে ভর্তি হতে চাননি তনয়া। ১০ দফা দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।
গত ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় ১০ দফা দাবিতে ‘আমরণ অনশন’-এ বসেন ছয় জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তনয়াও। পরের দিন, ৬ অক্টোবর তাঁদের সঙ্গে অনশনে যোগ দেন আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ‘আমরণ অনশন’-এ বসেন আরও দুই চিকিৎসক। ১১ অক্টোবর ধর্মতলায় অনশনে বসেন আরও দুই জুনিয়র ডাক্তার। ১৪ অক্টোবর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে অনশনে বসেন আর এক জুনিয়র ডাক্তার। ইতিমধ্যে ধর্মতলার অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনিকেত এবং অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়। রবিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন আর এক অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্য। তাঁরা তিন জনেই হাসপাতালে ভর্তি। সোমবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন জুনিয়র ডাক্তার তনয়া।