শনিবার আরজি করে চিকিৎসাধীন অনিকেতকে দেখতে এলেন তাঁর বাবা। ছবি: সংগৃহীত।
আমরণ অনশন করতে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে আরজি কর হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম ‘মুখ’ অনিকেত মাহাতো। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে অনশনমঞ্চ থেকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। শনিবার ছেলেকে দেখতে ঝাড়গ্রামের শিলদা থেকে আরজি করে এলেন তাঁর বাবা অপূর্ব কুমার মাহাতো।
অনিকেতকে দেখে বেরিয়ে অপূর্ব জানিয়েছেন, তাঁর পুত্রকে আগের থেকে ভাল রয়েছেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে জানিয়েছেন, যে সমস্যাগুলি তাঁর শরীরে দেখা দিয়েছিল, দেড় দিনের চিকিৎসায় পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। অপূর্ব বলেন, “ডাক্তারবাবুরা বলেছেন, যে সমস্যাগুলি তৈরি হয়েছিল সেগুলি এখন অনেকটাই কমেছে।” অনিকেতের সঙ্গে কথাও বলেছেন তাঁর বাবা। সুস্থ হয়ে অনিকেত কি আবার অনশনমঞ্চে ফিরবেন? না কি তাঁকে বারণ করবেন? প্রশ্ন শুনে অপূর্ব স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “ওই সিদ্ধান্ত অনিকেতই নেবে।”
গত বৃহস্পতিবার রাতে অনিকেতদের শিলদার বাড়িতে পৌঁছেছিল বিনপুর থানার পুলিশ। অপূর্ব এবং অনিকেতের মা তারারানি জানিয়েছিলেন, পুলিশ গিয়ে ছেলেকে ফোন করে বোঝাতে অনুরোধ করে। ছেলের সঙ্গে কথা বলতে তাঁদের সঙ্গে কলকাতায় যেতেও প্রস্তাব দেওয়া হয়। যেমনটা বাঁকুড়ার পুলিশ গিয়েছিল অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার স্নিগ্ধা হাজরার বাড়িতে। মধ্যরাতে কাউকে না পেয়ে শুক্রবার সকালে ফের গিয়েছিল পুলিশ। যদিও স্নিগ্ধার বাবা-মায়ের সঙ্গে পুলিশ কথা বলতে পারেনি। তবে অনিকেতের গ্রামের বাড়িতে যখন পুলিশ গিয়েছিল, সেই সময় মাহাতো দম্পতি বাড়িতেই ছিলেন। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ছেলের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করবেন না। তবে চিন্তা পিছু ছাড়ছিল না। তাই নিজের চোখে ছেলেকে দেখতে শনিবার সকালেই ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতায় চলে আসেন অনিকেতের বাবা।
গত ৫ অক্টোবর থেকে ১০ দফা দাবিতে ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুরুতে ৬ জন অনশনে বসেছিলেন। সেই তালিকায় ছিলেন না আরজি করের কেউ। যে আরজি কর নিয়ে এত বড় আন্দোলন, দু’মাসের বেশি সময় ধরে যা গোটা বাংলাকে আলোড়িত করছে, সেখানে আরজি করের কেউ কেন অনশনে রইলেন না তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। তার পর ৬ অক্টোবর অনশনে বসেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত। তাঁর অসুস্থতা নিয়ে আন্দোলনকারী তো বটেই, জনমানসেও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল। শনিবার ছেলেকে দেখে এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে অনেকটাই আশ্বস্ত বোধ করছেন উদ্বিগ্ন পিতা।