প্রতীকী ছবি।
সৎবাবার দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল সোনাগাছির এক নাবালিকা। মেয়েটির গর্ভপাত করানোর অনুমতি দিল শিশু কল্যাণ সমিতি।
বড়তলা থানা সূত্রের খবর, বারো বছরের ওই নাবালিকা আট সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। চলতি সপ্তাহে শিশু কল্যাণ সমিতির অনুমতি পাওয়ার পরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। আপাতত ওই নাবালিকাকে হোমে রাখা হয়েছে। ধৃত সৎবাবা পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
গত ২৭ জুন সোনাগাছির কয়েক জন বাসিন্দা এক যুবককে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাঁদের অভিযোগ, বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবক সৎমেয়েকে ধর্ষণ করেছে। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি তার মা জানতে পারেন। অভিযোগ, কাউকে কিছু জানালে মা-মেয়েকে খুন করার হুমকিও দিয়েছিল ধৃত। পুলিশ মেয়েটিকে হোমে পাঠানোর পাশাপাশি তার শারীরিক পরীক্ষাও করায়। তাতেই জানা যায় সে অন্তঃসত্ত্বা।
নিয়ম মতো এর পরে ওই নাবালিকাকে ফাস্ট ট্র্যাক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সমকক্ষ শিশু কল্যাণ সমিতির সামনে পেশ করা হয়। ফের তার শারীরিক পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেওয়া হয় সেখান থেকে। পুলিশ এর পরে আর জি কর থেকে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই শিশু কল্যাণ সমিতি গর্ভপাত করানোর নির্দেশ দিয়েছে বলে থানা সূত্রের খবর। সেখানকার এক পুলিশকর্মী বলেন, “নাবালিকার ক্ষেত্রে তার বয়স এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কথা মাথায় রেখে সাধারণত গর্ভপাত করানোরই নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট মেয়েটির শারীরিক পরিস্থিতি গর্ভপাত করানোর উপযুক্ত কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে বলা হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।”
ওই নাবালিকার মা শুক্রবার বলেন, “মেয়ের জন্য এটাই ভাল সিদ্ধান্ত। কিন্তু ওকে তো আমার সঙ্গে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি ওকে ফিরে পেতে চাই।” বড়তলা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, “মায়ের সঙ্গে থাকাকালীনই যে হেতু এ রকম ঘটনা ঘটেছে, তাই মা মেয়েকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে ধরা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নাবালিকাকে ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত শিশু কল্যাণ সমিতি হোমে রাখার নির্দেশ দিতে পারে।”
নাবালিকা নিগ্রহ এবং জোর করে তাদের যৌন পেশায় নামানো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সোনাগাছিতে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির সচিব কাজল বসু বলেন, “আমরা বাইরে যতই সচেতনতা প্রচার চালাই না কেন, একেবারে ঘরের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা আটকাতে চাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।”