বিকাশ ভবনে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে ব্রাত্য বসুর বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকের পর নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা কেটে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী চাকরিপ্রার্থীরা। জানালেন, তাঁরা সময়সীমা পেয়ে গিয়েছেন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নিয়োগের নিশ্চয়তা তাঁদের কাছে চলে আসবে। এমনই আশ্বাস মিলেছে বিকাশ ভবন থেকে।
যদিও শিক্ষামন্ত্রী ওই সময়সীমার কথা মানতে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, এটি জটিল একটি বিষয়। তাই দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে দ্রুত নিয়োগের জট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ব্রাত্য।
চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, শুক্রবারের বৈঠকে তাঁরা ইতিবাচক আশ্বাস পেয়েছেন। তাঁরা জানান, আইনি ব্যবস্থাকে সম্মান জানিয়েই নিয়োগের বন্দোবস্ত করছে রাজ্য সরকার। আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তেমনই নিশ্চয়তা তাঁরা পেয়েছেন।
চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলা এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সম্প্রতি সেই মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটি আবার শোনার কথা শীর্ষ আদালতে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা জানান, আইনি প্রক্রিয়াকে সম্মান জানিয়ে সব দিক বিবেচনা করেই তাঁদের নিয়োগের বিষয়টি দেখছে শিক্ষা দফতর। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে তেমনই ইঙ্গিত তাঁরা পেয়েছেন। তাঁরা আশাবাদী, দ্রুত এই সমস্য়া মিটে যাবে। কেটে যাবে নিয়োগের সমস্ত জট। বৈঠক শেষে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে শীঘ্রই নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে আমরা বাড়ি ফিরতে পারব।’’
তবে আপাতত আন্দোলন থামছে না। ধর্না যেমন চলছে, তেমনই চলবে বলে জানান চাকরিপ্রার্থীরা। ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁদের সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে আন্দোলন তুলে নেওয়া হবে।
চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে ব্রাত্যের বৈঠকে হাজির ছিলেন কুণাল ঘোষও। তিনি বলেন, ‘‘বৈঠক ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে। আইনি জটিলতায় এতগুলো নিয়োগ আটকে আছে। নির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে এর সমাধানের একটা প্রক্রিয়া চলছে। দু’পক্ষই তা নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ওমুক দিকে ওমুক সময়ে সব জট কেটে যাবে— এমন নিশ্চিয়তা দেওয়া যায় না। তবে আন্দোলনকারীরা চান ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জট কাটুক। আমি সহমত। শিক্ষা দফতর বিষয়টি দেখছে। পাঁজি ধরে দিনক্ষণ জানানো যাবে না এখনই।’’
তবে চাকরিপ্রার্থীরা বৈঠক থেকে বেরিয়ে জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে নির্দেশ এসেছে। সেই অনুযায়ী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত জট কাটবে বলে তাঁরা আশাবাদী। তাঁদের সেই দাবি প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘এমন কোনও নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে আসেনি।’’
বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বলেছেন, ‘‘ওঁরা ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্যার সমাধানের দাবি করেছেন। কিন্তু এটি জটিল বিষয়। দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রীও চান দ্রুত নিয়োগ হোক। আদালত যে ভাবে বলবে, আমরা সে ভাবে এগোব। স্বল্প সময়ের মধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আমি দু’বার বৈঠকে বসলাম। নিয়োগ কবে হবে, দিনক্ষণ বলতে পারছি না।’’
শুক্রবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির অদূরে উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীরা বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। রাস্তার উপর শুয়ে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা। সে প্রসঙ্গে ব্রাত্য বলেন, ‘‘বিক্ষোভ তো রোজই কোথাও না কোথাও হচ্ছে। কিছু রাজনৈতিক দলের প্ররোচনায় ২০২১ সালের নির্বাচনের আগেও হয়েছে। ২০২৪-এর নির্বাচনের আগেও হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের অঙ্গ।’’