(বাঁ দিকে) বাঁশদ্রোণীতে মৃত ছাত্র। সেই ঘাতক জেসিবি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাঁশদ্রোণীতে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে পুলিশের জালে ঘাতক জেসিবির চালক। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার পর থেকে চালক পলাতক ছিলেন।
বুধবার মহালয়ার সকালে বাঁশদ্রোণীতে পে লোডারের ধাক্কায় গাছের সঙ্গে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রের। কোচিং সেন্টারে যাওয়ার মুখে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল সে। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন। বুধবার দিনভর সেই বিক্ষোভ চলে। তাঁরা জানান, মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে ওই ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। রাস্তার বেহাল দশাকেই এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে দায়ী করেন স্থানীয়েরা।
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদারের সঙ্গে দেখা করার দাবিতে বাঁশদ্রোণীতে দিনভর বিক্ষোভ চলেছে। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও এলাকায় দেখা মেলেনি অনিতার। তাঁর উপর এলাকায় ক্ষোভ রয়েছে। অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে ওই এলাকায় রাস্তা বেহাল। বার বার দুর্ঘটনা সত্ত্বেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপই করেনি। খোঁড়াখুঁড়ির কাজও দীর্ঘ দিন ধরে চলছিল ওই এলাকায়, দাবি স্থানীয়দের।
কলকাতা পুরসভার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই এলাকার বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তার পরেও এলাকার রাস্তাঘাট মেরামত না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছিলই। বুধবারের ঘটনা সেই ক্ষোভে যেন ঘৃতাহুতি দেয়। পুলিশকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান মানুষ। পাটুলি থানার ওসিকে কাদাজলে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকেও আটকে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। রাতে কিছু ধরপাকড়ও করেছিল পুলিশ। তাদের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল রাতেই। তাঁদের মধ্যে বিজেপির কয়েক জন ছিলেন বলে দাবি। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে দলের কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এবং জেসিবির চালকের গ্রেফতারির দাবিতে ধর্নায় বসেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আলিপুর আদালত থেকে রূপা জামিন পেয়েছেন।