VC Buddhadeb Sau met Education Minister Bratya Basu

‘বরফ গলল’, ব্রাত্যের সঙ্গে বৈঠকের পর মনে করছেন যাদবপুরের রাজ্যপাল নিযুক্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকের পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ জানান, সমাবর্তন-সহ বিভিন্ন বাজেট নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৫৭
Share:

ব্রাত্য বসু এবং বুদ্ধদেব সাউ (বাঁ দিক থেকে) —ফাইল চিত্র।

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য এবং রাজ্যপাল দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে তখন। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁর আচার্য ক্ষমতাবলে একের পর এক অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করা প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলেও কটাক্ষ করেন। সেই রাজ্যপাল নিয়োজিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের সঙ্গে এই প্রথম বার বৈঠক করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বৈঠকে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারও। শুক্রবার বৈঠকের পর বুদ্ধদেব মনে করছেন, দু’পক্ষের মধ্যে বরফ গলেছে। আর শিক্ষামন্ত্রী জানাচ্ছেন, বুদ্ধদেবদের নিয়োগ রাজ্যপাল করলেও, তাঁরা রাজ্য সরকারের সঙ্গেই রয়েছেন। এমনকি, প্রাক্তন কয়েক জন উপাচার্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে বুদ্ধদেবদের, এমনটাও অভিযোগ করেন ব্রাত্য।

Advertisement

শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর যাদবপুরের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব বলেন, ‘‘আমাদের কনভোকেশন (সমাবর্তন) সংক্রান্ত কথাবার্তা হয়েছে। কনভোকেশনে খরচ-খরচা আছে। বাজেট আছে। এনসি বেঙ্গল— এই তিনটি বিষয় নিয়ে ইসি (কর্মসমিতির বৈঠক) এবং কোর্ট হতে হত। কোর্টের নোটিস উচ্চ শিক্ষা দফতর হয়ে আচার্যের কাছে যায়। আমরা সেই চিঠি পাঠিয়ে স্টেটাস জানার চেষ্টা করেছিলাম।’’ তবে শুক্রবার মূলত কর্মসমিতির বৈঠক করা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে বলে জানান বুদ্ধদেব। সেই আলোচনা সদর্থক হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। বুদ্ধদেবের কথায়, ‘‘এখন একটা ফর্মাল লেটার দিতে হবে আমাদের। বাজেটের ব্যাপারটা সম্পূর্ণ সরকারি ব্যাপার। ইসি আর কোর্ট না হলে বাজেট পেশ করা যায় না। তাই কর্মসমিতির বৈঠক যাতে ঠিকঠাক হয়, তাই নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’’

তার পরই বুদ্ধদেব জানান, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যে শীতল সম্পর্ক ছিল, সেটা কেটে গেল বলেই তাঁর মনে হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল বলুন বা যাদবপুরের উপাচার্য, সকলেই ছাত্রছাত্রীদের ভাল চান। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হয়। সেগুলো মেটানোর জন্য সবাইকে চেষ্টা করতে হবে।’’ বস্তুত, সুষ্ঠু ভাবে ক্যাম্পাস চালাতে চান, এই দাবি নিয়ে ধর্নাতেও বসেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্যপাল-নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব। তিনি ‘উচ্চতর কর্তৃপক্ষের’ হস্তক্ষেপ দাবি করেছিলেন। সুরাহা চেয়ে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারকে তিনি সব জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন। যার প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, এই ‘উচ্চতর কর্তৃপক্ষ’ বলতে বুদ্ধদেব কাকে বোঝেন, তাই নিয়ে। অন্য দিকে, রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক তরফা ভাবে আচার্যের ভিসি নিয়োগ ঘিরে রাজ্য-রাজ্যপাল তরজা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পৌঁছেছে। একতরফা ভাবে আলোচনা ছাড়াই রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করতে পারেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

অন্য দিকে, বুদ্ধদেবের সঙ্গে প্রথম বৈঠককে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে বর্ণনা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁদের যাঁরা অ্যাপয়েন্টিং অথরিটি, তাঁরা একটা চাপ তৈরি করতে চাইছেন। তাঁদের বলা হচ্ছে, অধ্যাপক বা প্রাক্তন উপাচার্য যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে ওঁরা বলেছেন, ওঁদের অ্যাপয়েন্টিং অথরিটি কেউ থাকতে পারে, কিন্তু ওঁরা সরকারের সঙ্গেই আছেন।’’ তবে তাঁর বক্তব্য, আলোচনায় যা যা উঠে এসেছে, তার মধ্যে অনেক আইনি ব্যাপার রয়েছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও বিচারাধীন। তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁরাও আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement