Jadavpur University

কুয়াশা নিংড়ে জলের নয়া প্রযুক্তি যাদবপুরে

গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিভাগের শিক্ষক অমিতাভ দত্ত এবং রঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায়। রঞ্জন জানিয়েছেন, পানীয় হিসাবে এই জল এখনই ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তার জন্যও গবেষণার অবকাশ রয়েছে।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৩৩
Share:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।

পথ দেখিয়েছে গুবরে পোকা।

Advertisement

আফ্রিকার নামিবিয়ার শুষ্ক মরুভূমিতে সেই গুবরে পোকার দল সমুদ্র থেকে আসা কুয়াশা থেকে তাদের পিঠের শক্ত অংশে জল সংগ্রহ করে, তা পান করে। তা দেখে উৎসাহিত হয়ে গবেষণায় নেমেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। তাদের গবেষণালব্ধ ফল বলছে, কুয়াশা থেকে জল সংগ্রহ করে সেই জল ব্যবহার হতে পারে শিল্পক্ষেত্র থেকে ঘরের কাজে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিভাগের শিক্ষক অমিতাভ দত্ত এবং রঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায়। রঞ্জন জানিয়েছেন, পানীয় হিসাবে এই জল এখনই ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তার জন্যও গবেষণার অবকাশ রয়েছে।

রঞ্জনের কথায়, শুধুই প্রাকৃতিক ভাবে নয়, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, এমনকি বহুতলের ছাদের কুলিং টাওয়ার থেকেও কুয়াশা তৈরি হয়। বাষ্প যখনই জলকণায় পূর্ণ হয়ে যায়, তখনই তা কুয়াশা। তিনি জানান, নামিবিয়ার ওই গুবরে পোকার পিঠের অংশ খুবই খসখসে। ওই অংশের সংস্পর্শে কুয়াশা জলে পরিণত হচ্ছে। ওই অঞ্চলের এক ধরনের মরুঘাসেও এই বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে পরীক্ষাগারে গবেষণায় উঠে আসে, খসখসে তারজালি (মেশ) কুলিং টাওয়ারে যুক্ত করলে কুয়াশা বাইরে না ছড়িয়ে, জল হিসাবে সংরক্ষিত হবে।

Advertisement

অ্যালুমিনিয়ামের তারজালি বানাতে গিয়ে দেখা যায়, এক ধরনের তারজালিতে জলকণা পড়ে পদ্মপাতায় জল পড়ার মতো পিছলে যাচ্ছে। অন্য এক ধরনের তারজালিতে তা আটকে থাকছে। এতে জল সংরক্ষণ সম্ভব নয়। কুয়াশা থেকে জল বেরিয়ে যাতে জমা হতে পারে, শেষে এমন তারজালিই বানাতে সক্ষম হয়েছেন পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষকেরা। ইতিমধ্যেই ওই তারজালির পেটেন্টের জন্য আবেদনও করা হয়েছে। এই গবেষণার গুরুত্ব বুঝে প্রথমে এর পাইলট প্রকল্পকে সাহায্য করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের সাহায্য আসে। তা থেকে তৈরি হয়েছে কুয়াশা থেকে জল সংরক্ষণের জন্য কুলিং টাওয়ারের আদলে ‘ফগ টানেল’। ইতিমধ্যেই দেশের একটি ইস্পাত নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এই গবেষণা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

রঞ্জন বলেন, ‘‘বিশ্ব জুড়ে ভবিষ্যতে জলসঙ্কটের আশঙ্কা শুরু হয়ে গিয়েছে। নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী রিচার্ড স্মলি ১৮ বছর আগে জানিয়েছিলেন, আগামী পঞ্চাশ বছরে যে দশটি সঙ্কটে পৃথিবী পড়বে, তার প্রথম দু’টি হল শক্তি এবং জল। তাই জলের ব্যবহার কমানো দরকার। পাশাপাশি, বিকল্প পদ্ধতিতে জল পাওয়ার পন্থাও বার করা জরুরি।’’ তাঁর বক্তব্য, কুয়াশা থেকে একটি বৃহদায়তন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘণ্টায় প্রায় ১০ হাজার লিটার জল পেতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement