শেয়াল ধরতে কামান বিমানবন্দরে

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, বিকেলে চেন্নাই থেকে কলকাতায় নামার সময়ে এক পাইলট একটি শেয়ালকে ঘুরতে দেখেন রানওয়েতে। ফলে বিমানের মুখ ঘুরিয়ে আবার উড়ে যান তিনি। কিন্তু বিমানবন্দরের অফিসারেরা রানওয়েতে গিয়ে আর সেই শেয়ালকে দেখতে পাননি।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৮ ০৩:০৮
Share:

শেয়াল তাড়াতে এ ভাবেই কামান দাগছেন কর্মীরা। রবিবার, কলকাতা বিমানবন্দর চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

যে কামান দেগে মশা মারা হয়, সেই কামানই এ বার কলকাতা বিমানবন্দরে শেয়াল তাড়ানোর হাতিয়ার হয়েছে।

Advertisement

দমদম পুরসভা থেকে মশা মারার কামান ধার করে গত শনিবার থেকে বিমানবন্দরের চৌহদ্দিতে শেয়াল তাড়াতে নেমেছেন বিশেষজ্ঞ দল।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, বিকেলে চেন্নাই থেকে কলকাতায় নামার সময়ে এক পাইলট একটি শেয়ালকে ঘুরতে দেখেন রানওয়েতে। ফলে বিমানের মুখ ঘুরিয়ে আবার উড়ে যান তিনি। কিন্তু বিমানবন্দরের অফিসারেরা রানওয়েতে গিয়ে আর সেই শেয়ালকে দেখতে পাননি। ততক্ষণে আবার সে ঢুকে পড়েছে গর্তে।

Advertisement

এটি কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। এমন উৎপাত লেগেই থাকে। বিষয়টি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কোনও কারণে বিমান নামার পরে শেয়ালের সঙ্গে যদি ধাক্কা লাগে, তা হলে প্রাণ সংশয় হতে পারে যাত্রী ও বিমানকর্মীদের। কিন্তু কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না শেয়ালের দলকে। রানওয়ের পূর্ব প্রান্তে বিস্তীর্ণ যে জায়গা, সেখানে ইতি-উতি ঝোপঝাড় আছে। তার ভিতরেই লুকিয়ে থাকে তারা। বেগতিক দেখলে ঢুকে পড়ে গর্তে।

আরও পড়ুন: বেহালায় সিলিন্ডার ফেটে আহত ৬

পূর্ব দিকে, যেখানে নারায়ণপুরের পাঁচিল, তার কাছেই বিমানবন্দরের ভিতরে বড় বড় ন’টি গর্ত খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। একটি মুখ বিমানবন্দরের ভিতরে, অন্যটি পাঁচিলের বাইরে। প্রায় ১ ফুট ব্যাসার্ধের সেই গর্ত দিয়ে শেয়ালের দল যাতায়াত করে। শনিবার তেমনই কামান নিয়ে গিয়ে দেখা যায় গর্তের ভিতরে ঘাপটি মেরে বসে একটি শেয়াল। গর্তে ধোঁয়া ঢুকতে শুরু করায় নারায়ণপুরের মুখ দিয়ে উঠে পালায় সে। পরিকল্পনা হয়েছে, নারায়ণপুরের দিকে গর্তগুলোর সামনে এ বার আরও বড় একটি করে গর্ত খোঁড়া হবে। ধোঁয়ার জ্বালায় শেয়াল গর্ত থেকে বেরোলেই বড় গর্তে পড়ে যাবে। তখন তাকে জাল দিয়ে ধরে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

শেয়াল তাড়ানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্তা বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা কিছু দিন ধরেই এই কাজ করছি। প্রথমে খাঁচা রেখে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শেয়ালেরা যথেষ্ট বুদ্ধিমান। প্রথম দিকে কয়েকটি ধরা পড়লেও পরে সতর্ক হয়ে যায়।’’

জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে বিমানবন্দরের ভিতরে রানওয়ের চারপাশে ২৩টি খাঁচা রাখা হয়েছিল। প্রতিটি খাঁচার সঙ্গে ছিল ক্যামেরাও। খাঁচার ভিতরে রাখা থাকত জ্যান্ত মুরগি। প্রথম দিকে মুরগির লোভে খাঁচায় ঢুকে ধরা পড়েছে কয়েকটি শেয়াল। প্রায় ১৬-১৭টি শেয়াল এ ভাবে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে ক্যামেরার ছবিতে দেখা গিয়েছে, সতর্ক শেয়াল খাঁচার ভিতরে মুখ ঢুকিয়ে মুরগি ধরার চেষ্টা করলেও পা ভিতরে দিচ্ছিল না। ফলে খাঁচার ফাঁদ অকেজো হয়ে পড়ে। তখনই শুরু হয় গর্ত খোঁজার কাজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement