সূচনা: আইসোলেশন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান। সোমবার, বেলুড় মঠে। নিজস্ব চিত্র
প্রবীণ ও অসুস্থ সন্ন্যাসীদের জন্য ‘আইসোলেশন ও বিশ্রাম গৃহ’ তৈরি হচ্ছে বেলুড় মঠে। সোমবার ওই ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হবে ভবনটি।
সূত্রের খবর, মঠের বয়স্ক ও অসুস্থ সন্ন্যাসীদের থাকার জন্য রয়েছে আরোগ্য ভবন। কিন্তু যে কোনও সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে একসঙ্গে সকলের থাকাটা ঝুঁকির। সে ক্ষেত্রে আলাদা থাকার ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। তাই করোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত দিক পর্যালোচনা করেই ওই ‘আইসোলেশন ও বিশ্রাম গৃহ’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মঠ কর্তৃপক্ষ। বেলুড় মঠ ডাকঘরের পিছন দিকে তৈরি হবে তেতলা ভবনটি। সোমবার, রাখিপূর্ণিমার দিন ভিতপুজোর পাশাপাশি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী স্মরণানন্দের স্পর্শ করা ইট দিয়েই ভিত গাঁথার সূচনা করেন প্রবীণ সন্ন্যাসীরা।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, ‘‘কোনও প্রবীণ সন্ন্যাসী অসুস্থ হয়ে পড়লে কিংবা চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েও পর্যবেক্ষণে থাকার প্রয়োজন হলে তিনি ওই ভবনে থাকতে পারবেন। সেই উদ্দেশ্যেই ওই আইসোলেশন এবং বিশ্রাম গৃহ তৈরি হচ্ছে।’’ তেতলা ভবনে মোট ১০টি সুইট থাকবে। সেখানে চিকিৎসার পরিকাঠামোও রাখা হবে। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, আগামী মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করে ওই ভবনের উদ্বোধন করা হবে।
দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। ঠিক কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। হাওড়া জেলাতেও প্রতিনিয়ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই সংক্রমণ যাতে কোনও ভাবে বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য ২ অগস্ট থেকে পুনরায় বেলুড় মঠ বন্ধ রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বেলুড় মঠের পাঁচ-ছ’জন সন্ন্যাসী ও জনা সাতেক কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। উপসর্গহীন হলেও তাঁরা হাসপাতালে কোয়রান্টিনে রয়েছেন।
সন্ন্যাসী ও কর্মী মিলিয়ে বেলুড় মঠের ভিতরে প্রায় সাড়ে পাঁচশো জন আবাসিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৫০ জনের ইতিমধ্যেই করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। বাকিদেরও লালারস পরীক্ষা করানো হবে। জুনের শুরুতে প্রথমে আরোগ্য ভবনে বসবাসকারী দুই প্রবীণ সন্ন্যাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। চিকিৎসার পরে তাঁরা পুরোপুরি সুস্থ। তবে পরবর্তী সময়ে আরও কয়েক জন আক্রান্ত হতেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আপাতত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে মঠের দরজা।