Examination

ভোটের মুখেই আইএসসি-র প্র্যাক্টিক্যাল, চিন্তায় শিক্ষকেরা

গত সোমবার প্রকাশিত আইসিএসই বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা-সূচিতে দেখা যাচ্ছে, দশম শ্রেণির লিখিত পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৫ মে। শেষ হচ্ছে ৭ জুন। আইএসসির পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৫ মে। শেষ হচ্ছে ১৬ জুন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২১ ০৬:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিধানসভা ভোটের দিন ঠিক হওয়ার পরেই সম্প্রতি দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা-সূচি ঘোষণা করেছে আইসিএসই বোর্ড। সেই সূচিতে দ্বাদশ শ্রেণির তিনটি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার নির্ঘণ্ট নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষক মহলের একাংশ চিন্তিত। কারণ, ওই তিনটি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার ঠিক আগে-পরে তৃতীয় এবং চতুর্থ দফার ভোট। বিভিন্ন স্কুলকে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হিসেবে বাছা হয়। তাই ভোটের এত কাছাকাছি সময়ে সুষ্ঠু ভাবে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নেওয়া কতটা সম্ভব, তা ভেবে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের একটা বড় অংশ।

Advertisement

গত সোমবার প্রকাশিত আইসিএসই বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা-সূচিতে দেখা যাচ্ছে, দশম শ্রেণির লিখিত পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৫ মে। শেষ হচ্ছে ৭ জুন। আইএসসি, অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণির লিখিত পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৫ মে। শেষ হচ্ছে ১৬ জুন। দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার মধ্যে কম্পিউটার সায়েন্স পেপার-২ প্র্যাক্টিক্যাল প্ল্যানিং সেশন হবে ৮ এপ্রিল, হোম সায়েন্স পেপার-২ প্র্যাক্টিক্যাল প্ল্যানিং সেশন এবং ইন্ডিয়ান মিউজ়িক কর্নাটকি পেপার-২ প্র্যাক্টিক্যাল ৯ এপ্রিল। এ ছাড়া পদার্থবিদ্যা, রসায়ন-সহ অন্য বিষয়ের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষাগুলি পয়লা এপ্রিল থেকে ৩১ মে-র মধ্যে নিজেদের সুবিধামতো নিতে পারবে সংশ্লিষ্ট স্কুল। তবে ওই তিনটি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা সূচি অনুয়ায়ী ৮ এবং ৯ এপ্রিলই নিতে হবে।

এখানেই দেখা দিয়েছে বিপত্তি। কারণ, ৬ এপ্রিল তৃতীয় দফার ভোট। চতুর্থ দফার ভোট ১০ এপ্রিল। ৬ তারিখ হাওড়া, হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু জায়গায় ভোট রয়েছে। ১০ তারিখ হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাকি অংশ ছাড়াও ভোট রয়েছে কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে। এই পাঁচ জেলাতেই আইসিএসই বোর্ডের অধীনস্থ বেশ কিছু স্কুল রয়েছে। শিক্ষকদের একাংশের মতে, এই স্কুলগুলি থেকে যারা দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা দিচ্ছে, তাদের অনেকেরই ওই তিনটি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা থাকতে পারে। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভোটের ঠিক মুখে স্কুলগুলি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

Advertisement

সাধারণত দেখা যায়, ভোটের দিন দুয়েক আগে থেকেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। ভোট পরিচালনা করার আধিকারিক থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী— সকলেই পৌঁছে যান সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, যে এলাকাগুলিতে ৬ এবং ১০ এপ্রিল ভোট, সেখানে কী ভাবে ৮ এবং ৯ এপ্রিল প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা হবে? বিশেষত যে সব স্কুলে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা ৯ এপ্রিল, সেখানে পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে হওয়া খুবই কঠিন বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ।

তাঁদের বক্তব্য, ওই দু’দিন যে বিষয়গুলির প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা আছে, সেগুলির পরীক্ষার্থীর সংখ্যা খুব বেশি নয় ঠিকই। পাশাপাশি, এই বিষয়গুলি প্র্যাক্টিক্যালের প্ল্যানিং সেশন। পুরোপুরি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নয়। কিন্তু এই প্ল্যানিং সেশনের জন্যও পরীক্ষার্থীদের স্কুলে আসতেই হবে। কিন্তু তারা কী ভাবে স্কুলে আসবে, তা নিয়ে উদ্বেগ থেকে যাচ্ছে। শিক্ষকদের আরও প্রশ্ন, করোনা আবহে ভোটগ্রহণ এবং আইএসসি-র মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা এত কাছাকাছি সময়ে হলে স্কুলগুলির পক্ষেও কি করোনা-বিধি ঠিক মতো মানা সম্ভব হবে? অভিভাবকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এখনও করোনা নির্মূল হয়নি। তাই পরীক্ষা-সূচি তৈরি করার আগে আরও বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন ছিল।

যদিও আইসিএসই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন বলেন, ‘‘স্কুলে এসে পরীক্ষার্থীদের ওই তিনটি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা দিতে কোনও অসুবিধা হবে না। আইসিএসই বোর্ড সব সময়ে পড়ুয়াদের কথা ভেবে শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকল্পনা করে। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement