১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জয়ন্তী সাহার কথায়, ‘‘আমরা চেয়ারপার্সনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম সেই নেতৃত্বের নাম, যিনি ফিরহাদ হাকিমেরও উপরে। যাঁর নির্দেশে চেয়ারপার্সন দফতর বণ্টন করেছেন। তিনি কোনও উত্তর দেননি। এমনকি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কথাও বলেননি।’’
ফাইল চিত্র।
সবেমাত্র বোর্ড গঠন হয়েছে। এখনও চেয়ারম্যান পারিষদের তালিকাই ঠিক হয়নি। তার আগেই দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্তকে ছ’টি দফতর দিয়ে দেওয়া হয়েছিল! দিনকয়েক আগে সেই নির্দেশনামায় সই করেছিলেন খোদ পুরসভার চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরী। সেই সিদ্ধান্ত ঘিরে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মধ্যে। তৃণমূলের একক আধিপত্য থাকা এই পুরসভার প্রথম বোর্ড মিটিং ছিল বৃহস্পতিবার। এ দিন সেখানে সেই অসন্তোষের প্রতিফলনেই তুমুল আলোড়ন হয়।
চেয়ারপার্সনকে তাঁর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে দাবিপত্র জমা দেন পুরসভার ১৬ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। পূর্ত, লাইসেন্স, কর আদায়, বিজ্ঞাপন-সহ ছ’টি দফতর নিতাইবাবুকে দেওয়া হচ্ছে বলে ২৪ মার্চ চেয়ারপার্সন বিশেষ নির্দেশনামা জারি করেছিলেন। যার প্রেক্ষিতে চেয়ারপার্সন দাবি করেছিলেন, দলীয় নির্দেশে তিনি নিতাইবাবুর জন্য দফতর বরাদ্দ করেছেন। যদিও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম গত সোমবার বলেছিলেন, ‘‘এমন কিছু করাটা অনিয়ম। কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে বোর্ড মিটিংয়েই দফতর বণ্টন করতে হবে।’’ পুরমন্ত্রী নিজেও দক্ষিণ দমদম পুরসভার এই বিষয়টি জানেন না বলেই দাবি করেছিলেন।
এ দিন বোর্ড মিটিংয়ে ক্ষুব্ধ কাউন্সিলরেরা কস্তুরীর কাছে জানতে চান, কেন নিতাইবাবুকে তড়িঘড়ি দফতর বরাদ্দ করা হল? সূত্রের খবর, কস্তুরী তাঁদেরও জানান, দলীয় নির্দেশেই তিনি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তখন কাউন্সিলরেরা জানতে চান, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের থেকেও উচ্চতর নেতৃত্ব কে, যাঁর নির্দেশে তড়িঘড়ি বিধাননগরের বিধায়ক তথা দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর ‘বিশ্বস্ত অনুচর’ নিতাইবাবুকে এতগুলি দফতর বণ্টন করা হয়েছে? প্রশ্নবাণের সামনে পড়ে কস্তুরী নীরব ছিলেন বলেই খবর। বৈঠকে উপস্থিত নিতাইবাবুও চুপ ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জয়ন্তী সাহার কথায়, ‘‘আমরা চেয়ারপার্সনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম সেই নেতৃত্বের নাম, যিনি ফিরহাদ হাকিমেরও উপরে। যাঁর নির্দেশে চেয়ারপার্সন দফতর বণ্টন করেছেন। তিনি কোনও উত্তর দেননি। এমনকি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কথাও বলেননি।’’ ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুনমুন চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘কার নির্দেশে চেয়ারপার্সন এক জনকে এতগুলি দফতর দিলেন, সেই নামটা সামনে আসা দরকার। আমরাও তো দল করি। কিন্তু উনি কোনও উত্তরই দেননি।’’
ঘটনা প্রসঙ্গে চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে তাঁকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি মেসেজের উত্তরও দেননি।