ফাইল চিত্র।
কিছু দিন আগে রাজ্যের শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, বেসরকারি স্কুলের মতো সরকারি, সরকার-পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলেও ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য হাউস তৈরি করতে হবে। প্রতিটি স্কুলে থাকবে চারটি হাউস। এ বার সেই হাউসগুলির নাম স্কুলগুলির কাছে জানতে চাইল শিক্ষা দফতর। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘৫ ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলগুলিকে এই তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। নতুন শিক্ষাবর্ষে আগামী ২ জানুয়ারি ‘বুক ডে’। তার পর থেকেই হাউস কার্যকর করতে হবে।’’ প্রতিটি হাউসে ‘ক্যাপ্টেন’ হিসাবে থাকবে এক জন করে পড়ুয়া। এক জন শিক্ষকও থাকবেন ‘হাউস মাস্টার’ হিসাবে।
শিক্ষা দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, হাউসের নাম কোনও মনীষীর নামে হতে পারে, হতে পারে সংশ্লিষ্ট স্কুলের কাছাকাছি থাকা নদী বা এলাকার নামে। তবে রাজনৈতিক নেতাদের নামে হাউসের নামকরণ করা যাবে না। মিত্র ইনস্টিটিউশন, ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘‘চারটি হাউসের নাম ঠিক করতে গিয়ে এমন অসংখ্য কৃতীদের নাম এসেছে, যাঁরা এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র, পরবর্তী কালে শিক্ষকতাও করেছেন। ছাত্রদের মধ্যে বাছা হয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং যতীন দাসকে। শ্যামাপ্রসাদ ছিলেন প্রাক্তন ছাত্র ও স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি। শিক্ষকদের থেকে বাছা হয়েছে কালিদাস রায় এবং কেশবচন্দ্র নাগকে। কেশববাবু স্কুলের প্রধান শিক্ষকও ছিলেন।’’
কেন এমন সিদ্ধান্ত? শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এর উদ্দেশ্য স্কুলে খেলাধুলো থেকে সাংস্কৃতিক চর্চাকে প্রসারিত করা। যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের চারটি হাউস হয়েছে বেগম রোকেয়া, ধ্যানচাঁদ, সত্যজিৎ রায় এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নামে। স্কুলটি ছেলেদের হলেও বেগম রোকেয়াকে বেছেছি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে লিঙ্গসাম্যের দিকটি তুলে ধরতে। উনি এক জন শিক্ষাবিদও ছিলেন। ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলাতেও যাতে পড়ুয়ারা অংশ নেয়, তাই বাছা হয়েছে ধ্যানচাঁদকে।’’
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “বেসরকারি স্কুলগুলিতে হাউস বহু দিন ধরে থাকলেও সরকারি স্কুলে তা ছিল না। ফলে সরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের সামনে হীনম্মন্যতায় ভুগত। এই উদ্যোগ সেই হীনম্মন্যতা কাটাতে সাহায্য করবে।’’