Traffic

Traffic: গড়ে ১৩ মিনিট সময় বাঁচাচ্ছে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল

এর মধ্যেও পথচারীদের রাস্তা পারাপার এবং কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে গাড়ি যাতায়াত করাতে এই সিগন্যাল ব্যবস্থা কতটা উপযোগী, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২২ ০৬:২২
Share:

বিপত্তি: গাড়ি চলাচলের মধ্যেই রাস্তা পেরোনোর চেষ্টা। স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালের জন্য পারাপার করার পর্যাপ্ত সময় মিলছে কি না, উঠছে প্রশ্ন। শুক্রবার মোহরকুঞ্জের কাছে, জওহরলাল নেহরু রোডে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

শহরে গাড়িচালকদের সময় বাঁচছে গড়ে প্রায় ১৩ মিনিট! গত কয়েক মাসে লাগাতার অটো (স্বয়ংক্রিয়) সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু রেখে দ্রুত রাস্তা সাফ করাতে পেরেই এমনটা সম্ভব হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রের দাবি। যা নিয়ে উৎসাহিত লালবাজারের বড় কর্তারা মনে করছেন, দু’দিনের মধ্যে শুরু হতে চলা মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়েও যানজট মোকাবিলায় অন্যতম সহায়ক হয়ে উঠবে এই স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা। কিন্তু এর মধ্যেও পথচারীদের রাস্তা পারাপার এবং কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে গাড়ি যাতায়াত করাতে এই সিগন্যাল ব্যবস্থা কতটা উপযোগী, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

Advertisement

কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, কমিশনার বিনীত গোয়েল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শহরের যানশাসনে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা নতুন করে চালু করার উপরে জোর দিয়েছিলেন। সেই মতো পুলিশের ‘প্ল্যানিং অ্যান্ড সার্ভে’ বিভাগ শহরের রাস্তাগুলির উপরে সমীক্ষা করে। তাতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের পাশাপাশি কোন রাস্তায় প্রতিদিন গড়ে কত সংখ্যক গাড়ি যাতায়াত করে, সেই সংক্রান্ত হিসাব করা হয়।

কোন রাস্তায়, কখন কত গাড়ির চাপ থাকে, তারও তালিকা তৈরি করা হয় আলাদা ভাবে। এর পরে রাস্তা ধরে ধরে সিগন্যালের সময় ঠিক করা হয়েছে বলে খবর। তাতেই চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ হয়ে গাড়ির যাতায়াতে প্রতিটি সিগন্যালে কিছু সেকেন্ড করে বাঁচিয়ে মোট ১৩ মিনিট সাশ্রয় করানো যাচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্তার মন্তব্য, ‘‘এমন ভাবে ভাবা হয়েছে যে, কোনও গাড়িকে একটি সিগন্যালে দাঁড়াতে হলে যেন পরের অন্তত চারটি সিগন্যালে দাঁড়াতে না হয়। এর ফলে রাস্তায় সময় তো বাঁচছেই, পথে বাড়তি পুলিশকর্মী মোতায়েন করে রাখার ঝক্কিও এড়ানো যাচ্ছে।’’

Advertisement

কিন্তু ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থায় রাস্তার কোনও অংশে কোনও গাড়ি বিকল হয়ে গেলে দ্রুত তা সরিয়ে ফেলা যাচ্ছে না। নির্দিষ্ট সময় অন্তর সিগন্যাল লাল বা সবুজ হতে থাকায় বিকল হয়ে যাওয়া গাড়ির পিছনে লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে অন্য যানবাহনের। সেই সঙ্গে হঠাৎ মিছিল বা পথ অবরোধ হলে তো কথাই নেই। জরুরি পরিস্থিতিতে গ্রিন করিডর করতেও নাজেহাল হতে হচ্ছে পুলিশকে। লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে বলেকয়ে কার্যোদ্ধার করতে নাভিশ্বাস উঠছে।

বয়স্কদের রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে এমন সিগন্যাল ব্যবস্থা একটি বড় সমস্যা বলে মানছেন খোদ পুলিশকর্মীরাই। স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালে পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য সর্বাধিক ১৫ সেকেন্ড সময় দেওয়া হয়। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ওই সময়ের মধ্যে রাস্তার মাঝামাঝি পৌঁছতে না পৌঁছতেই সিগন্যাল সবুজ হয়ে গাড়ি চলা শুরু হয়ে যাচ্ছে। বিপদের ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে এই কারণে।

লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা যদিও বললেন, ‘‘প্রতিটি রাস্তার দু’টি লেনের মাঝের ডিভাইডারের কাছে একটা ‘সেফ জ়োন’ থাকার কথা।
একবারে রাস্তা পার হতে না পারলে সেখানে দাঁড়ানোর কথা। কিন্তু এ শহরের বহু রাস্তাতেই তেমন ‘সেফ জ়োন’ তৈরির জায়গা নেই। এটাই সমস্যা।’’

কিন্তু লালবাজারের পুলিশকর্তারা মনে করছেন, এতে সময় বাঁচানোর সঙ্গে সঙ্গে সকলের জন্য এক রকমের সিগন্যাল ব্যবস্থা রাখা যাচ্ছে। থানা বা ট্র্যাফিক গার্ড স্তরে বললেই আর আগের মতো সিগন্যাল বদলে গ্রিন করিডর করে নেওয়ার ভিআইপি ব্যবস্থাপনা পাচ্ছেন না ছোট-বড় নেতারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement