ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার গুদাম থেকে পাইপ চুরির তদন্তের কিনারা হয়নি এখনও। কিন্তু তার আগেই প্রাথমিক তদন্তে এবং পুরসভার অভ্যন্তরীণ তদন্তে কর্মীদের একাংশের গাফিলতির কথা সামনে আসছে। ইতিমধ্যে এক পুরকর্মী ছাড়াও এক জন নিরাপত্তাকর্মীকে শো-কজও করা হয়েছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা ওই গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তারক সিংহ বলেন, “সেন্ট্রাল স্টোর থেকে কী ভাবে এবং কত পরিমাণ লোহার পাইপ চুরি গিয়েছে তা তদন্তসাপেক্ষ। কিন্তু নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও সেখান থেকে যে পাইপ চুরি গিয়েছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। অভ্যন্তরীণ তদন্তে কিছু কর্মীর গাফিলতি রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পুর কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০০০ সাল থেকে ওই গুদামে জলের পুরনো কিছু পাইপ পড়ে রয়েছে। বর্তমানে ওই ধরনের লোহার পাইপ আর ব্যবহার করা না হলেও কোথাও মেরামতি করতে হলে তখন গুদামে রাখা ওই লোহার পাইপ ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি টালা এবং পলতায় ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন মেরামতিতেও এই লোহার পাইপের অংশ ব্যবহার করা হয়েছে। সেই কারণেই ওই পাইপ পড়ে থাকলেও সেগুলি পরিত্যক্ত নয়। তাই অন্যান্য পরিত্যক্ত সামগ্রীর মতো এই লোহার পাইপ বিক্রি না করে পুরসভার গুদামে মজুত রাখা আছে।
পুরসভার নথি থেকে জানা গিয়েছে, ওই গুদামের এক কর্মী পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানান, গত ৩ অগস্ট কাজে গিয়ে তিনি দেখেন, ওই গুদামের তালা ভাঙা। তার পরেই দেখা যায়, সেখানে রাখা বেশ কিছু লোহার পাইপ নেই। পুর কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ওই গুদাম থেকে প্রায় ১৯ টন পাইপ চুরি গিয়েছে, যার বাজারদর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা! এর পরেই স্থানীয় এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে পুরসভা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
তবে চুরির এই ঘটনায় যে সব প্রশ্ন উঠে আসছে, তা কর্মীদের একাংশের গাফিলতির দিকেই ইঙ্গিত করছে। যেমন, কোনও গাড়ি বা ভ্যানের সাহায্য ছাড়া ওই পরিমাণ লোহার পাইপ গুদামের বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু গুদামের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে কী ভাবে তা সম্ভব? পুরসভার সমস্ত দফতরের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ওই গুদামে রাখা থাকে বলে সেখানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কোনও মালপত্র গুদাম থেকে বার করার সময়ে তার রেকর্ড রাখাও আবশ্যক। কিন্তু তারকবাবু জানাচ্ছেন, গুদামের যে অংশে ওইসব পাইপ রাখা ছিল, সেখানে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। তবে তাতে ওই গুদামে নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের দায়ও অস্বীকার করা যায় না। তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট এলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে জানাচ্ছে পুরসভা।