ভারতীয় জাদুঘর।—ফাইল চিত্র।
একা রাস্তায় রক্ষে নেই! সঙ্গে উড়ালপুল। যেখান থেকে সারা দিনই অগুনতি যান চলাচল করে। ফলে যানবাহনের ধোঁয়া, বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা অনায়াসে ঢুকে যায় ভিতরে। তাতে ঢাকা পড়ে মূল্যবান সামগ্রী, দুষ্প্রাপ্য তৈলচিত্র। ক্ষতি হয় সে সব জিনিসের। অর্থাৎ বায়ুদূষণের হাত থেকে রেহাই নেই ভারতীয় জাদুঘরেরও!
তাই এ বার বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপনে বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতাকেই থিম করতে চলেছেন ভারতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। কী ভাবে বায়ুদূষণের হাত থেকে জাদুঘরের মূল্যবান সামগ্রী বাঁচানো যায়, আগামী পরশু, মঙ্গলবার তা নিয়েই আলোচনাসভার আয়োজন করেছেন কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, বুধবার ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হলেও সে দিন ইদ। তাই এ বার এক দিন আগেই হচ্ছে ওই সভা।
প্রসঙ্গত, বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা কী ভাবে সমস্ত সামগ্রীর ক্ষতি করছে, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে। শুধু আলোচনাই নয়, তা নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করছেন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বায়ুদূষণ এতটাই ‘সাইলেন্ট কিলার’ যে সব সময়ে ক্ষতিটা তেমন ভাবে বোঝা যায় না বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। জাদুঘরের সংরক্ষণ পরামর্শদাতা তথা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ন্যাশনাল মিউজ়িয়ামের প্রাক্তন সংরক্ষণ অধিকর্তা আর পি সবিতা বলেন, ‘‘এমনিতেই কলকাতায় আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। কোনও সামগ্রীর উপরে জমে থাকা ধূলিকণা বাতাস থেকে আর্দ্রতা শোষণ করে। একটা বিক্রিয়া হয়। ফলে ক্ষতি হয় পাণ্ডুলিপি, টেক্সটাইল, তৈলচিত্র-সহ পুরনো সামগ্রীর। তবে এই ক্ষতিটা খালি চোখে বোঝা যায় না। এটা অনেকটা ক্যানসারের মতো।’’ এই বায়ুদূষণ রোধে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, কী ভাবে এটাকে এড়ানো যাবে, তা নিয়েই সে দিন আলোচনা করা হবে বলে জাদুঘর সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, বায়ুদূষণ কী ভাবে সামগ্রীর ক্ষতি করছে, তা নিয়ে একটি সমীক্ষা করার কথা আগেই জানিয়েছিলেন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
সে দিন বিকেলে পুরনো কলকাতায় ময়দান কতটা জায়গা জুড়ে ছিল, তার ফলে শহরের পরিবেশ কেমন ছিল, বায়ূদূষণ কতটা কম ছিল, তা নিয়ে আরও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ভারতীয় জাদুঘরের অধিকর্তা রাজেশ পুরোহিত জানাচ্ছেন, গড়ের মাঠ বা ময়দানের চেহারা কেমন ছিল, তা পুরনো ছবি, পুরনো কলকাতার ম্যাপ দিয়ে দেখানো হবে। শহর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কী ভাবে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে, তা নিয়েও আলোচনা করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চাইছি বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করে শহরের পুরনো চেহারা কিছুটা হলেও ফিরিয়ে দিতে। তার জন্য জন সমর্থন দরকার। মঙ্গলবার আলোচনার মাধ্যমে তারই সূত্রপাত করা হবে।’’