n বিপজ্জনক: মোবাইলে চোখ রেখেই যানবাহনের মধ্যে দিয়ে রাস্তা পারাপার। শনিবার, লেনিন সরণিতে। ছবি: সুমন বল্লভ
পথ নিরাপত্তা সপ্তাহেও এড়ানো গেল না দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু। গত চার দিনে শহরের রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যাও কিছু কম নয়। শহরে বিভিন্ন ঘটনায় এক জনের মৃত্যু এবং ১৭ জনের আহত হওয়ার তথ্য দিচ্ছে লালবাজার। অথচ, পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ পালনের মধ্যে দিয়ে চালকদের সচেতন করতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। কিন্তু তার পরেও যে নিয়ম ভেঙে চলা গাড়ির দৌরাত্ম্যে লাগাম টানা যায়নি, তথ্য থেকেই তা স্পষ্ট।
চলতি বছরের ৩১ অগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর ছিল কলকাতা পুলিশের পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ। ওই সময় জুড়ে পথের বিধি পালনে জোরদার প্রচার চলেছে। বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে ওই চার দিন বিভিন্ন সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তার পরেও এই ক’দিনে দুর্ঘটনায় মৃত্যু, আইন ভেঙে চলা বেপরোয়া গাড়ি বা রেষারেষি, কোনওটাই এড়ানো যায়নি। শহরের রাস্তায় কোথাও বেপরোয়া গতির বলি হয়েছেন মোটরবাইক চালক, কোথাও গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছেন পুলিশকর্মী, কোথাও আবার লেন ভেঙে বেসরকারি বাস ধাক্কা দিয়েছে পথচারীকে। চার দিনে একাধিক দুর্ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েক জনের আঘাত গুরুতর।
এই সময়ের মধ্যে শহরের রাস্তায় আইন ভাঙায় মোট ১৯,১২৯টি ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ট্র্যাফিক পুলিশের তথ্য জানাচ্ছে। বেপরোয়া গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, সিগন্যাল না মানা, হাসপাতাল-সহ অন্যান্য ‘নো হর্ন জ়োন’-এর সামনে বিধিভঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চার দিনে শহরের বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ড এ জন্য ১৩৮৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। হর্ন না বাজানোর পথ-বিধি পালনে চালকদের সচেনতা বাড়াতেও প্রচার চালানো হয় বলে জানিয়েছে লালবাজার। ‘নো পার্কিং জ়োন’-এ গাড়ি রাখার জন্য ৭,১২৫টি মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
এ ছাড়া গোটা পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে সিগন্যাল না মানার জন্য ১৫০৬টি, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্য ৭৮৯টি, বিনা হেলমেটে গাড়ি চালানোর জন্য ১২৭৬টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, পথ নিরাপত্তা সপ্তাহের তৃতীয় দিন, অর্থাৎ ২ সেপ্টেম্বর সর্বাধিক ৫,১৯৬টি এবং ৩১ অগস্ট সব থেকে কম ৪০৩০টি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে সব থেকে বেশি ১৭৬৮টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সাউথ ট্র্যাফিক গার্ড।
যদিও শহরের রাস্তায় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি পথের আইন ভাঙার জন্য চালকদের অসচেতনতাকেই দায়ী করছে ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশ। তাই পথের আইন নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ ছাড়া, বছরভর পথের আইন ভাঙলে একই ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহে চালক ও পথচারী— সকলের সচেতনতা বাড়ানোর উপরেই মূলত প্রতি বছর জোর দেওয়া হয়।’’