রামনবমী মিছিল। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্ট ও পুলিশের নিষেধাজ্ঞা ছিল, রামনবমীর মিছিলে ২০০ জনের বেশি অংশ নিতে পারবেন না। মিছিলে রাখা যাবে না অস্ত্র এবং ডিজে। এই তিনটি নিষেধাজ্ঞাই অমান্য করা হল বুধবার বিকেলে, মধ্য কলকাতার একটি মিছিলে। এ দিন বিকেলে রামলীলা ময়দান থেকে শুরু হওয়া বিজেপির সেই মিছিলে জনসমাগম ছিল অনেক বেশি। অনেককেই তলোয়ার হাতে দেখা গিয়েছে তাতে। মিছিলে আলো জ্বালিয়ে ডিজের ব্যবহারও হয়েছে। আনন্দ পালিত রোড ধরে সশস্ত্র সেই মিছিল এগোয় শহরের পথে।
অথচ, রামনবমীকে কেন্দ্র করে শহরের রাস্তায় ৬০টি মিছিল সামলাতে এ দিন প্রায় পাঁচ হাজার পুলিশ নামিয়েছিল লালবাজার। মিছিল ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সিসি ক্যামেরায় নজরদারির পাশাপাশি পুলিশের ক্যামেরাতেও নজর রাখার কথা ছিল। মিছিল বিশেষে কোথাও সহকারী নগরপাল পদমর্যাদার, তো কোথাও যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটি মিছিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থানা ও ডিভিশনের তরফে পুলিশি বন্দোবস্ত ছিল। তার পরেও কেন নিয়ম লঙ্ঘন হল?
লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, যেখান থেকে ওই মিছিল শুরু করার কথা ছিল, সেখানে জমায়েতের পরে আরও একটি মিছিল এসে মিশে যায়। পুলিশের তরফে আরও দাবি, প্রথমে কোনও অস্ত্র ছিল না, পরে অস্ত্র-সহ অংশগ্রহণকারীদের ওই মিছিলে দেখা যায়।
রামনবমী উপলক্ষে এ দিন সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নানা আয়োজন থাকলেও মিছিল শুরু হয় মূলত বেলার দিকে। তবে, মিছিলকে কেন্দ্র করে কিছু সময়ের জন্য যানজট হলেও কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছে লালবাজার। জানা গিয়েছে, এ দিন রামনবমী উপলক্ষে শহরে বেরোনো মিছিলের মধ্যে সাতটি তুলনামূলক ভাবে বড় হলেও বাকিগুলি ছিল ছোট।
এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ সিজিআর রোড থেকে একটি মিছিল বেরোয়। খিদিরপুর সেতু, হেমচন্দ্র রোড হয়ে সেই মিছিল শেষ হয় বাবুবাজার মোড়ে। তুলনায় বড় মিছিল বেরোয় বিকেলে। তখনই একাধিক শোভাযাত্রা বেরোয়। দুপুর ৩টে নাগাদ বিধান সরণি থেকে শুরু হওয়া রামনবমীর মিছিল বাগবাজারে শেষ হয়। কাশীপুর, হেস্টিংস ও এন্টালি থেকেও বড় মিছিল বেরোয়।
একাধিক মিছিল হলেও দীর্ঘক্ষণের জন্য যানজট হয়নি বলে দাবি করেছে লালবাজার। যার বড় কারণ, ছুটির দিন ও প্রবল গরমে রাস্তায় গাড়ি ও মানুষের সংখ্যা কম।