—ফাইল চিত্র।
অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে শুয়েই ২৬ বছরের গৃহবধূটি তাঁর মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন, অতিরিক্ত পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কী ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন তাঁর উপরে। সেই নির্যাতন সহ্য করতে না-পেরেই যে তিনি নিজের গায়ে আগুন দিয়েছিলেন, সে কথাও হাসপাতালের চিকিৎসকের উপস্থিতিতে পুলিশকে জানিয়েছিলেন ওই তরুণী। আগুনে পুড়ে যাওয়ার ছ’দিনের মাথায় গত ২৭ মে মারা যান প্রিয়াঙ্কা সাহা (২৬) নামে ওই বধূ। ঘটনার পরে পলাতক ছিলেন শ্বশুর ও শাশুড়ি। শনিবার ভোরে বধূ-নির্যাতনের অভিযোগে মৃতার শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামীকে গ্রেফতার করল চিৎপুর থানার পুলিশ।
এ দিন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক ইন্দ্রনীল চক্রবর্তীর এজলাসে শ্বশুর রতন সাহা, শাশুড়ি অঞ্জলি সাহা ও স্বামী সুমন সাহাকে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী আদালতে জানান, ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ননদ মধুমিতা এখনও পলাতক। তাঁর খোঁজ পেতে ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চান তদন্তকারীরা। তা শুনে বিচারক তিন অভিযুক্তকেই ১২ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, সাড়ে ছ’বছর আগে চিৎপুরের বাসিন্দা সুমনের সঙ্গে বিয়ে হয় প্রিয়াঙ্কার। সুমন একটি কেটারিং সংস্থার কর্মী। পুলিশকে প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছিলেন, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে তাঁর উপরে অত্যাচার শুরু হয়। সেই পীড়ন সহ্য করতে না-পেরেই গত ২১ মে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন তিনি। পুলিশ জানায়, অগ্নিদগ্ধ তরুণীকে তাঁর স্বামী ও পাড়ার লোকজন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। ২৭ মে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃতার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। ঘটনার পরেই শ্বশুর ও শাশুড়ি বারাসতে আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। সেখান থেকেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। স্বামীকে ধরা হয় তাঁর বাড়ি থেকে।