Kasba Student Death

কসবায় ছাত্রমৃত্যুর পিছনে কোন রহস্য? ফরেন্সিক রিপোর্টে প্রাথমিক ইঙ্গিত মিলেছে, জানাল পুলিশ

সোমবার কসবার রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র শেখ শানের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায় স্কুলবাড়ির নীচে। এর পরেই মৃত ছাত্রের বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৩০
Share:

কসবার সেই স্কুল। —ফাইল চিত্র।

কসবার ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষকেই দোষী ঠাওরেছিল মৃত ছাত্রের পরিবার। দশম শ্রেণির ছাত্রকে প্রতিহিংসাবশত ‘পিটিয়ে মারা হয়েছে’ বলেও দাবি করেন তার বাবা। সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে অবশ্য খুনের প্রমাণ পায়নি ফরেনসিক দল। বরং মঙ্গলবার প্রাথমিক তদন্তের পর ফরেনসিক রিপোর্টে আত্মহত্যারই ইঙ্গিত মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। যদিও একই সঙ্গে পুলিশ জানতে পেরেছে সোমবার দুর্ঘটনাটি ঘটার আগে ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষকের কথা কাটাকাটি হয়েছিল।

Advertisement

সোমবার কসবার রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র শেখ শানের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায় স্কুলবাড়ির নীচে। এর পরেই মৃত ছাত্রের বাবা শেখ পাপ্পু কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর ছেলেকে মারধর করেছেন স্কুলের শিক্ষকেরা। তাতেই মৃত্যু হয়েছে তার। এমনকি, স্কুল কর্তৃপক্ষ বছর খানেক আগে তাঁকে হুমকি দিয়েছিল বলেও দাবি করেন পাপ্পু। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই কসবার ওই স্কুলের চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩০২ এবং ধারা ১২০বি অনুযায়ী খুনের মামলা রুজু করা হয়। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। কোনও স্কুলই তাদের পড়ুয়াকে ‘চিহ্নিত’ করে না। হেনস্থাও করে না।’’

শানের পরিবারের অভিযোগ এবং তার স্কুল কর্তৃপক্ষের পাল্টা জবাব চালাচালির মধ্যেই মঙ্গলবার সকাল থেকে কসবার ওই স্কুলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। সেখানে ঘটনার পূনর্নির্মাণ করা হয়। ছ’তলা থেকে একটি পুতুল মাটিতে ফেলে দেখেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। মাপজোক করেও দেখেন গোটা এলাকা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ সূত্রে জানা যায় কসবার ওই ঘটনায় আত্মহত্যার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে ফরেনসিক দল।

Advertisement

অন্য দিকে, ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে আরও একটি তথ্য প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার কসবায় ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এফআইআর দায়ের হওয়ার আগে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ স্কুলের প্রিন্সিপাল একটি মেল পাঠান কসবার ওসিকে। ওই মেলে বলা হয়েছিল, ‘‘একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রদের অঙ্কের প্রজেক্ট দেওয়া হয়েছিল। সোমবার সেই প্রজেক্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। শেখ শান নামের এক ছাত্র প্রজেক্ট জমা না দেওয়ায় তার বাবাকে বিষয়টি জানানোর কথা বলেন শিক্ষক। পাল্টা ওই ছাত্র শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এর পরে শিক্ষক তাকে নিজেদের বিশ্রাম নেওয়ার ঘর স্টাফ রুমে ডেকে এনে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে ভিতরে ঢোকেন। ২ মিনিট পরে তাকে ক্লাসে চলে যেতে বলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এর পরই ওই মেলে স্কুলের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন এর পরই ছাত্রটি ঝাঁপ দেয়।

স্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে পুলিশ অবশ্য আগেই জেনেছে, কসবার ওই স্কুলের ছ’তলায় সংস্কারের কাজ চলছিল। বারান্দায় গ্রিল বসানোর কাজ চলছিল সেখানে। সোমবার দুপুরে ওই ছ’তলার করিডোরেই শেষবার দেখা গিয়েছিল শানকে। তার অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যে স্কুলবাড়ির নীচে মেলে তার রক্তাক্ত দেহ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement