ফাইল ছবি
সপ্তাহখানেক আগে পর্যন্তও শহরের খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দাম ঘোরাফেরা করছিল প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকার আশপাশে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে তা আবার চড়তে শুরু করেছে। কোথাও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০ টাকায়, কোথাও আবার দাম ছুঁয়েছে ৭০ টাকা।
কেন বাড়ছে দাম? শহরের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার কোলে মার্কেট সূত্রে জানা গিয়েছে, নাসিক থেকে পেঁয়াজের আমদানি গত কয়েক দিনে অনেকটাই কমে গিয়েছে। মূলত সেই কারণেই দাম ঊর্ধ্বমুখী। পশ্চিমবঙ্গ চাষি ভাণ্ডার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট কমল দে জানান, আগে যেখানে কোলে মার্কেটে প্রতি দিন ২০ থেকে ২৫ গাড়ি পেঁয়াজ ঢুকত, সেখানে এখন আসছে মাত্র ১০-১২ গাড়ি। তিনি বলেন, “নাসিকে এখন পেঁয়াজের মরসুম শেষের দিকে। ওখানে পাইকারি বাজার থেকে কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা দামে পেঁয়াজ কিনে ট্রাকে করে আনতে প্রতি কেজিতে খরচ হচ্ছে বাড়তি ১০-১২ টাকা। এর উপরে ট্রাকপিছু ১০ শতাংশের মতো পেঁয়াজ নষ্ট হয়। সব মিলিয়ে নাসিক থেকে কলকাতায় পেঁয়াজ এনে পাইকারি বাজারে বিক্রির সময়ে খুব কম লাভ থাকছে ব্যবসায়ীদের।’’
তবে কোলে মার্কেটের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের দাবি, এই চড়া দাম বেশি দিন স্থায়ী হবে না। কারণ, বাজারে আসতে শুরু করেছে রাজ্যের ‘সুখসাগর’ পেঁয়াজ। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শীতের শেষে এই পেঁয়াজের উৎপাদন শুরু হয়। কমলবাবু বলেন, “এ বার সুখসাগর আসতে একটু দেরি হল। আমাদের কাছে প্রাথমিক ভাবে যা হিসেব এসেছে, এ বার রাজ্য জুড়ে ছ’লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে। আগামী জুলাই মাস পর্যন্ত রাজ্যের পেঁয়াজ বাজারে থাকবে। দামও থাকবে নিয়ন্ত্রণে।’’ যদিও পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের মতে, রাজ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা ঠিক মতো থাকলে বছরের অন্তত আট মাস রাজ্যের পেঁয়াজই কিনতে পারতেন গৃহস্থেরা। নাসিকের উপরে এতটা নির্ভর করতে হত না।
তবে রাজ্যের সুখসাগর পেঁয়াজ বাজারে এলেও দাম এখনই কমবে না বলে মনে করছেন পোস্তা বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পোস্তা বাজার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য তথা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রানা সিংহের মতে, “আমাদের বাজারে নাসিক থেকে পেঁয়াজ আসা প্রায় বন্ধ। বাংলাদেশে চাহিদা থাকায় নাসিক থেকে আসা বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ সেখানে চলে যাচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ সুখসাগরের উৎপাদন ভাল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এই পেঁয়াজের দৈনিক জোগান সমান নয়। তাই প্রথম কিছু দিনের জন্য পেঁয়াজের দাম কমলেও তা আবার বাড়ার আশঙ্কা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’