হিমাচলপ্রদেশ এবং কাশ্মীর থেকে নিয়ে আসা মাদক সরবরাহ করা হচ্ছিল কলকাতার বিভিন্ন নামী হোটেলের পানশালায়। শুক্রবার ভোরে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হওয়া মাদক-চক্রের চাঁই শেখ সফিককে জেরা করে এমন খবরই জানতে পেরেছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। লালবাজার সূত্রের খবর, পার্ক স্ট্রিটের নামী পানশালা এবং ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের কিছু হোটেলে হাশিশের মতো
মাদক সরবরাহ করা হত। এই চক্রে শহরের কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া এবং মডেলও জড়িত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
সম্প্রতি এমডিএমএ (চলতি নাম ‘এক্সট্যাসি’)-র মতো মাদক-সহ পার্ক স্ট্রিট থেকে পাকড়াও করা হয়েছিল তিন যুবককে। তাদের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় রাজদীপ শর্মা নামে আরও এক জনকে। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, এমডিএমএ বা ‘এক্সট্যাসি’র সেবনে হঠাৎ মানসিক ভাবে এক ধরনের তূরীয় ভাব আসে। যে কারণে বর্তমানে এই মাদকের চাহিদা ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। লালবাজারের খবর, রাজদীপ মূলত এমডিএমএ পাচারের কাজেই যুক্ত ছিল। পরে হাশিশের কারবারেও নামে সে। রাজদীপকে জেরা করেই সফিকের খোঁজ পাওয়া যায়।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা জেনেছেন, কলকাতায় রাজদীপ-সহ জনা দশেক যুবককে ওই হাশিশ নিয়ে এসে বিক্রি করত সফিক। প্রতি ভরির দাম হিসেবে নিত ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা। পরে সেই হাশিশ আরও অনেকটা বেশি দামে শহরের বিভিন্ন খদ্দেরের কাছে বিক্রি করত রাজদীপেরা।
রাজদীপের দেওয়া সূত্র ধরেই তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সফিক রাজস্থানে পালিয়ে যাওয়ার ছক কষছে। সেই মতো তক্কে তক্কে ছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিমানবন্দরে ঢোকে সফিক। শুক্রবার ভোরের বিমান ধরে জয়পুরে পালানোর পরিকল্পনা ছিল তার। বিমানবন্দরের ‘চেক-ইন’ এলাকা থেকেই তাকে পাকড়াও করেন পুলিশের গোয়েন্দারা। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, এই চক্রের শিকড় মুম্বই-সহ দেশের একাধিক শহরে ছড়িয়ে রয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোকেও খবর দেওয়া হয়েছে।