সেই ক্লাবে চলছে নতুন নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র
দু’টি বাড়ির মধ্যে মাত্র ১২ ফুট চওড়া একটি জায়গা। এক সময়ে সেখানে পাড়ার ছেলেরা ক্যারম খেলতেন। ছোট একটি ক্লাবও বানানো হয়েছিল। সেখানেই রাতারাতি বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘটনাটি চেতলার। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে। অভিযোগ উঠেছে, ওই ক্লাবের সদস্যেরা ওইটুকু জায়গার মধ্যে রীতিমতো পাকা নির্মাণ করে একটি জিম চালু করতে উদ্যোগী হয়েছেন। ইতিমধ্যেই একতলার ছাদ ঢালাই হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের তরফে বিষয়টি আগেই মেয়রকে জানানো হয়েছিল। তখনও ছাদ ঢালাই হয়নি। পিলার তোলার কাজ চলছিল। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত ১০ এপ্রিল ওই চিঠি পাওয়ার পরে মেয়র বারণ করায় নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময়ে চেতলা থানাকেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল।
অভিযোগ, এর পরে গত ২০ জুলাই হঠাৎ রাতারাতি ছাদ ঢালাই হয়ে যায়! ২৮ নম্বর রাখালদাস আঢ্য রোডের পাশে সেই ‘চেতলা ফিজিক্যাল কালচার’ ক্লাবে গিয়ে দেখা যায়, একতলার ছাদ ঢালাইয়ের পরে দোতলার সিঁড়ি তৈরির প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে। বাইরের দরজায় কোনও তালা নেই। জায়গাটা
মূলত একটি বাড়ির পাশের অংশবিশেষ। সেই ক্লাবে ঢোকার পরে স্থানীয় দু’-তিন জন যুবক এগিয়ে এলেও কেউই নিজের পরিচয় জানাতে চাননি। এমনকি, ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এক যুবক শুধু বললেন, ‘‘ববিদার (ফিরহাদ হাকিম) সঙ্গে কথা বলে নেবেন। তিনিই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট।’’
পাশেই একটি ফ্ল্যাটবাড়িতে বেশ কয়েক জন প্রবীণ দম্পতির বাস। তাঁরা সেখানে গত প্রায় ৩০ বছর ধরে আছেন। তাঁদের আশঙ্কা, বাড়ির জানলা থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে ওই জিম তৈরি হলে তাঁদের পারিবারিক শান্তিভঙ্গ হবে। অভিযোগ, ওই নির্মাণের জন্য কলকাতা পুরসভার কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, যেখানে স্বয়ং ফিরহাদ হাকিমই বারণ করে দিয়েছিলেন, সেখানে কী করে এ ভাবে নির্মাণকাজ চলছে! উল্টে ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাঁদের প্রেসিডেন্টই ফিরহাদ হাকিম!
স্থানীয় বিজেপি নেতা অংশুমান সরকারের অভিযোগ, ‘‘ববি হাকিমের অনুমতি ছাড়া এই এলাকায় গাছের পাতাও নড়ে না। সেখানে তাঁর অনুমতি ছাড়া গোটা নির্মাণ কী করে হবে? খোঁজ নিয়ে দেখুন, চেতলা জুড়ে তৃণমূলের স্থানীয় কার্যালয় থেকে আরও কত নির্মাণ বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছে।’’
কী বলছেন ফিরহাদ হাকিম?
তাঁর কথায়, ‘‘পাড়ার ছেলেদের মন রেখে যেমন চলতে হবে, তেমনই স্থানীয় বাসিন্দাদের সুবিধা-অসুবিধাও দেখতে হবে। দু’পক্ষকে একসঙ্গে বসিয়ে একটি মীমাংসার মধ্যবর্তী পথ বার করতে হবে।’’