প্রতীকী চিত্র।
পুলিশের কড়াকড়ি বেড়েছে। যখন তখন তল্লাশি হচ্ছে। তাই নিজেদের ‘কুটির শিল্প’ বাঁচাতে কলকাতার উপকণ্ঠের ঘনবসতি এলাকাকেই বেছে নিয়েছে মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিরা। ঘনবসতির আড়ালে লেদ কারখানার নামে ওই অস্ত্র তৈরি করছে মুঙ্গেরের কারিগরেরা। যা ফের পাঠানো হচ্ছে মুঙ্গেরেই। কারবারিদের হাত ঘুরে সেখান থেকে তা পৌঁছে যাচ্ছিল ক্রেতার কাছে। স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে ওই কারখানা চললেও অস্ত্রের বরাত আসত মুঙ্গের থেকেই। অস্ত্র তৈরির পরে তা আবার চলে যেত সেই বরাত প্রদানকারীর কাছে।
পুলিশ জানিয়েছে, স্ট্র্যান্ড রোড থেকে ধৃত তিন অস্ত্র কারবারিকে জেরা করার পরে পুরনো ওই তথ্য আবারও উঠে এসেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে। বৃহস্পতিবার রাতে এসটিএফ মহম্মদ চাঁদ ওরফে সোনু, মহম্মদ সুলতান এবং মহম্মদ সিল্টু নামে মুঙ্গেরের বাসিন্দা তিন অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করেছিল। তাদের জেরা করে হাওড়ার পিলখানা এবং ফজিরবাজারে দু’টি কারখানার সন্ধান পান গোয়েন্দারা। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ৭০টি অসম্পূর্ণ দেশি পিস্তল। লেদ কারখানার আড়ালেই চলছিল অস্ত্র তৈরির ওই কারবার। তিন বছর আগে লেদ কারখানা নাম করে হাওড়ার পিলখানায় ওই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল সোনু। এ ছাড়া নিজে ফজিরবাজারের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত সে। গত এক বছরে এসটিএফ রাজারহাটের নারায়ণপুর, কাঁকিনাড়া, আগরপাড়া, বারুইপুর, মহেশতলা-সহ শহরের উপকণ্ঠের বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেয়েছিল। প্রতিটি জায়গাতেই ধৃতেরা ছিল মুঙ্গেরের বাসিন্দা।
গোয়েন্দাদের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে মুঙ্গেরের পুলিশ বেআইনি অস্ত্র তৈরি ঠেকাতে তৎপর হয়েছে। এর পরেই সেখানকার কারিগরেরা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে কলকাতার উপকণ্ঠের ঘনবসতি এলাকাই তাদের পছন্দ বলে ধৃতেরা জেরায় স্বীকার করেছে। স্থানীয় পরিচিতি কাজে লাগিয়ে হাওড়া, নারায়ণপুর, কাঁকিনাড়া, আগরপাড়া, বারুইপুর, মহেশতলার মতো জায়গায় লেদ কারখানার জন্য বাড়ি ভাড়া নিচ্ছে। স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে লেদের আড়ালে তৈরি করা হত ওই অস্ত্র।