অঙ্গদানে স্বেচ্ছায় এগিয়ে এল পরিবার

ওই প্রৌঢ়ার দু’টি কিডনি পেয়েছেন এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন ২৮ বছরের তরুণী ও ৩০ বছরের এক তরুণ

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪০
Share:

ইতি দেব।

অল্প সময়ের ব্যবধানে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চেষ্টা করেও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকেরা। সেই সংবাদ এখনও জানেন না স্বামী কাজল দেব। তবে যখন স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনবেন, এ-ও জানবেন কয়েক জন মুমূর্ষুকে কী ভাবে জীবনদান করে গিয়েছেন তিনি। কারণ, ইছাপুরের বাসিন্দা ইতি দেব (৫৭) অঙ্গদান করে আরও তিন জনকে নতুন জীবনের দিশা দেখালেন।

Advertisement

ওই প্রৌঢ়ার দু’টি কিডনি পেয়েছেন এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন ২৮ বছরের তরুণী ও ৩০ বছরের এক তরুণ। বাইপাসের ধারে অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধকে দেওয়া হয়েছে তাঁর লিভার। গ্রহীতা বৃদ্ধ কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা। দু’বছর ধরে তিনি সিরোসিস অব লিভারে ভুগছিলেন। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে আপাতত তিন জনই সুস্থ আছেন বলে জানা গিয়েছে।

৬ অগস্ট ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন মৃতার স্বামী। এর চার দিন পরে ইতিদেবীও ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। প্রথমে দু’জনেই মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার তাঁদের ছেলে, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার আনন্দ দেব জানান, মায়ের আগেও দু’বার স্ট্রোক হয়েছে। বাবার অবস্থার উন্নতি হলেও, মায়ের অবনতি হতে থাকে। বছর সাতান্নের প্রৌঢ়াকে শুক্রবার এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সোমবার বিকেলে প্রৌঢ়ার ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করা হয়। এসএসকেএম সূত্রের খবর, অঙ্গদানের জন্য মৃতার পরিবারকে বেশি

Advertisement

বোঝাতে হয়নি।

এ দিনই কাজলবাবুর হাসপাতাল থেকে ছুটি হওয়ার কথা ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার ছুটি দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন তাঁর ছেলে। আনন্দ জানান, বাবার স্মৃতিশক্তির সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সমস্যা মিটতে সময় লাগবে।

অ্যাপোলো গ্লেনেগল্‌স হাসপাতালের সিইও রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘২০১৯ সালের দ্বিতীয়ার্ধে রাজ্যে অঙ্গদানে যে গতি এসেছে, সেই ধারা যেন বজায় থাকে।’’ রোটোর (রিজিওনাল অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন) যুগ্ম অধিকর্তা অর্পিতা রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্রেন ডেথ হলেও অনেক পরিবার এগিয়ে আসে না। শনিবার এসএসকেএমে এক জনের ব্রেন ডেথ হওয়ার পরে কাউন্সেলিং করেও রাজি করানো যায়নি। সেখানে ইতিদেবীর পরিবার যে ভাবে এগিয়ে এসেছে, তা দৃষ্টান্তমূলক। অঙ্গ প্রতিস্থাপনে যুক্ত চিকিৎসকদেরও প্রশংসা প্রাপ্য।’’

মৃতার ছেলে বলেন, ‘‘মায়ের অঙ্গদানের ইচ্ছে ছিলই। তাই ব্রেন ডেথ হয়েছে জেনে সেটাই পূরণ করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement