বিভাস ঘোষ।
নাগেরবাজারের বিস্ফোরণে ছেলে যে মারা গিয়েছে, এখনও তা জানেন না এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সীতা ঘোষ। ছেলেকে না-পেয়ে মাঝেমধ্যেই কেঁদে উঠছেন তিনি। কখনও বলছেন, ছেলে তার দাদুর (প্রয়াত) কাছে চলে গিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে নাগেরবাজারের কাজিপাড়া বিস্ফোরণে আহত হন মধ্যমগ্রামের গ্রিন পার্কের বাসিন্দা শুভম দে। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনিও। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে শুভমের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয় বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। তাঁকে জরুরি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকেরা। শুভমের মাথার একটি অংশে স্প্লিন্টার রয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সীতাদেবীর শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। মাঝেমধ্যেই ছেলে বিভাস ওরফে বিল্টুকে খুঁজছেন তিনি। ছেলে অন্য ওয়ার্ডে রয়েছে বলে স্ত্রীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিল্টুর বাবা জন্মেজয় ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘সীতা যখন ছেলেকে খুঁজছে, তখন বলছি, বিল্টু আছে হাসপাতালেরই অন্য ওয়ার্ডে। আবার সীতা কখনও কখনও আপনমনেই বলে চলেছে, বিল্টু দাদুর (তিনি ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন) কাছে চলে গিয়েছে।’’ এ দিন স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়ার চেষ্টা করেছেন সীতাদেবী।
নাগেরবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত সঙ্গীতা প্রসাদ। তাঁর অন্ত্রে বারুদ লেগেছিল। নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে যাওয়ায় ওই অংশটি দূষিত হয়ে যায়। তাঁর শরীরে স্প্লিন্টার পাওয়া গিয়েছে। একাধিক বার অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। তাতে সাফল্য মিললেও সংক্রমণের বিষয়টি ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। তাই ওই মহিলাকে এখন তীব্র মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমছে।
বিস্ফোরণে আহত, মগরাহাটের বাসিন্দা অজিত হালদার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সিসিইউয়ে আছেন। চিকিৎসকেরা জানাছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। অজিতবাবু-সহ ছ’জন আহত আরজি করে চিকিৎসাধীন। সকলেরই চিকিৎসা চলছে আরজি কর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে। বিস্ফোরণে আহত, কাজিপাড়ার বাসিন্দা শরৎ শেঠির দেহের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গেলেও তিনি কথা বলতে পারছেন।