হাতে ধারালো কাটারি। এক মহিলার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে ডাকছিল মাঝবয়সি এক ব্যক্তি। মহিলা দরজা খুলতেই তাঁর ঘাড়ে ও পিঠে পরপর কাটারির কোপ মারে সে। মহিলার চিৎকার শুনে জড়ো হয়ে যান এলাকার লোকজন। তাঁরাই ওই ব্যক্তিকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। বুধবার সকালে, বাঁশদ্রোণী থানার সুভাষপল্লির ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকারই বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের রেহেনা খাতুনের সঙ্গে আটচল্লিশ বছর বয়সি সঞ্জয় রায়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে আট বছর ধরে। রেহেনা একটি বেসরকারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। সঞ্জয় আগে কাগজ বিক্রি করত। পরে একটি সংস্থায় সাফাইয়ের কাজে ঢোকে। একই এলাকায় বাড়ি হওয়ায় তাঁদের আলাপ। দু’জনেরই দু’বার করে বিয়ে হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, রেহেনা তৃতীয় বিয়ে করার পরিকল্পনা করছিলেন। তাতে আপত্তি ছিল সঞ্জয়ের। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কয়েক দিন ধরে অশান্তিও চলছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে ধোপদুরস্ত পোশাক পরে, হাতে কাটারি নিয়ে সোজা রেহেনার বাড়িতে হাজির হয় সঞ্জয়। ওই মহিলা প্রথমে সঞ্জয়ের হতে কাটারি দেখে হকচকিয়ে যান। অভিযোগ, কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর ঘাড়ে ও পিঠে পরপর কোপ মারে ওই ব্যক্তি। রেহেনার আর্তনাদে ছুটে আসেন স্থানীয়েরা। তাঁরাই ধরে ফেলেন অভিযুক্তকে। পরে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ এসে রেহেনাকে উদ্ধার করে জোকা ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, দুপুরে ওই মহিলার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ দিকে, ঘটনার পরেও সঞ্জয়ের নির্লিপ্ত আচরণ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন এলাকাবাসী। তাঁরা ওই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন। সেই ভিডিয়ো ফুটেজেও অভিযুক্তকে ভাবলেশহীন মুখে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। কেন ওই মহিলার উপরে আক্রমণ চালানো হল? স্থানীয়দের প্রশ্নের উত্তরে সঞ্জয়ের সাফ জবাব, ‘‘ওঁর সঙ্গে গত আট বছর ধরে সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের বিয়ে হয়েছে। তার কাগজপত্রও আছে। তৃতীয় বিয়ে করতে যাচ্ছে শুনে আর মাথা ঠিক রাখতে পারিনি।’’
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতকে আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হবে।