Salt Lake AJ block

কঙ্কাল-কাণ্ডে প্রশ্নের ভিড়, আবার হবে ফরেন্সিক পরীক্ষা

১০ ডিসেম্বর এজে ব্লকের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় কঙ্কালটি। তার আগে ওই বাড়ির গৃহকর্তা অনিল মহেনসরিয়া পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:১৯
Share:

সল্টলেকের এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছিল কঙ্কাল। ফাইল চিত্র

সল্টলেকের একটি বাড়ি থেকে নরকঙ্কাল উদ্ধারের পরে দু’দিন পেরোলেও রহস্যের জট কাটল না। প্রাথমিক ভাবে খুনের ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ একটি ধারণায় পৌঁছলেও তার পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি তারা।

Advertisement

১০ ডিসেম্বর এজে ব্লকের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় কঙ্কালটি। তার আগে ওই বাড়ির গৃহকর্তা অনিল মহেনসরিয়া পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ করেছিলেন। অনিল জানান, তাঁরা সন্দেহ সহযোগীদের নিয়ে তাঁদের বড় ছেলে অর্জুনকে অপহরণ করে খুন করেছেন তাঁর স্ত্রী। একটি মিসিং ডায়েরিও দায়ের করেন অনিল। তদন্তে নেমে পুলিশ অনিলের স্ত্রী গীতা ও ছোট ছেলে বিদুরকে গ্রেফতার করে। তার পরেই ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয় কঙ্কালটি। একটি তোয়ালে দিয়ে সেটি মোড়া ছিল। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, অর্জুনকে খুন করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি অর্জুনেরই কি না, তা নিশ্চিত ভাবে জানতে একাধিক পরীক্ষা করছে পুলিশ।

পুলিশের একাংশের কথায়, ময়না-তদন্ত এবং ফরেন্সিক পরীক্ষার ফলাফলের উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে। এই সব পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলে পুলিশ রহস্যের জট খোলার পথে বেশ কিছু স্পষ্ট ধারণা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। খুনের কারণ কী, সেই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। ঘটনার তদন্তে বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা দফতর নেমেছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশ হেফাজতে নিয়ে দুই ধৃতকে দফায় দফায় জেরা করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু অসঙ্গতি মিলেছে অভিযুক্তদের বক্তব্যে। সব কিছু যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে এই ঘটনার নেপথ্যে পারিবারিক অশান্তিই অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অর্জুন না থাকলে পারিবারিক অশান্তি হবে না, তেমন মনে করার নিশ্চিত কোনও তথ্য তদন্তকারীরা পাননি। তাই পুরো ঘটনার পিছনে সম্পত্তিগত বা অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, সে প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছে পুলিশ। অর্জুন না থাকলে কে বা কারা লাভবান হবেন, সেই দিকটিও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, ধৃতেরা এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন, তা মনে করার কোনও কারণ তাঁদের জানা নেই।

খুনের পিছনে কারণ ছাড়াও এই ঘটনায় রহস্য ক্রমশই ঘনীভূত অপহরণের অভিযোগ নিয়ে। অর্জুনকে অপহরণ করা হয়েছে, সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাঁর বাবা। তিনি ঘটনার আগে ঠিক কোথায় ছিলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর অধরা। যদি কঙ্কালটি অর্জুনের হয়ে থাকে, তবে তাঁকে অপহরণ কখন, কোথায় করা হয় সেই প্রশ্ন উঠেছে। যদি সেটি তাঁর না হয়, সে ক্ষেত্রে অপহরণের অভিযোগের সারবত্তা কতটা, সেই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তবে বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তদন্তকারীরা।

অনিল মহেনসরিয়া পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তিনি জানতে পারেন যে ২৯ অক্টোবর তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী গীতা রাঁচীতে নিজের মায়ের বাড়িতে গিয়েছেন। কিন্তু অনিলের দাবি, ৩০ নভেম্বর তিনি জানতে পারেন অর্জুন সেখানে নেই। ওই মাসখানেক সময়ে অর্জুন কোথায় ছিলেন, তিনি আদৌ মায়ের সঙ্গে রাঁচীতে গিয়েছিলেন কি না, সেই সব রহস্যের জট খোলার চেষ্টা করছে পুলিশ। ওই দম্পতির মেয়ে বৈদেহী ওরফে মুস্কানকেও খুঁজছে পুলিশ। সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।

বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানান, তদন্ত চলছে। সম্ভাব্য সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থল থেকে ফের একবার নমুনা সংগ্রহ করবে বলেও সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement