শুধু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। আর তাতেই ২২ ঘণ্টারও বেশি কলকাতা বিমানবন্দরে আটকে রইলেন ৪৩৯ জন বিদেশি। যাঁদের কারও কাছে ভারতে ঢোকার ভিসা পর্যন্ত নেই।
এঁদের সকলেরই দুই ভিন্ন শহর থেকে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, খারাপ আবহাওয়ার জন্য দু’টি বিদেশি বিমান চলে আসে কলকাতায়। আটকে পড়া যাত্রীদের মধ্যে ২৭৬ জনকে বুধবার রাতে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেড্ডা থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে খালি একটি বিমানকে। রাত ১২টা নাগাদ ওই যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকায়। বাকি ১৬৩ জন যাত্রীর ঢাকা যাওয়ার কথা আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে ঢাকার আকাশে কুয়াশা জমতে শুরু করে। তার ঠিক আগের দিন রাতে কুয়াশার জন্য কলকাতায় নামতে না পেরে ফিরে যেতে হয়েছিল চারটি বিমানকে। মঙ্গলবারও ঢাকায় নামতে না পেরে রাত দুটো নাগাদ কলকাতায় এসে নামে সৌদি আরবিয়ান এয়ারলাইন্স। জেড্ডা থেকে যাত্রীদের নিয়ে বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি ঢাকা যাচ্ছিল।
এর প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে বুধবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ১৬৩ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতায় নামে গাল্ফ এয়ারের বিমান। সেটিরও ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকার আবহাওয়া সকাল সাতটার পরেই ঠিক হয়ে যায়।
কিন্তু বিমানযাত্রীরা আটকে পড়েন কলকাতায়। ওই ১৬৩ জনের ঢাকা যাওয়ার কথা বৃহস্পতিবার দুপুরে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, দেশি-বিদেশি প্রত্যেক পাইলটের ডিউটির সময়সীমা বাঁধা রয়েছে। এক দিনে বা এক সপ্তাহে নির্দিষ্ট ঘণ্টার বেশি পাইলট উড়তে পারেন না। একে ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন’ (এফডিটিএল) বলে। মঙ্গলবার গভীর রাত ও বুধবার ভোরে কলকাতায় নামার পরে দুই বিদেশি বিমান সংস্থার দুই পাইলটের ক্ষেত্রেও ওই এফডিটিএল চালু হয়ে যায়। তাঁরা এবং দুই বিমানের অন্য পাইলট ও বিমানসেবিকারা অভিবাসন দফতরের বিশেষ অনুমতি নিয়ে কলকাতার হোটেলে চলে যান।
শুধু আটকে পড়েন যাত্রীরা। গাল্ফ এয়ারের যাত্রীদের দেখভালের দায়িত্ব পড়ে ভদ্র ইন্টারন্যাশনালের উপরে। আর সৌদি বিমানের দায়িত্ব বর্তায় এয়ার ইন্ডিয়ার উপরে। বিদেশি কোনও বিমান আচমকা কলকাতায় নেমে এলে তার যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব এই দুই সংস্থাই পায়। এর বদলে এদের টাকা দেয় সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থা।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, আচমকা বিদেশি কোনও বিমান সংস্থা কোনও নির্দিষ্ট কারণে অন্য দেশে নামতে বাধ্য হলে সেই বিমানের পাইলট ও বিমানসেবিকাদের ন্যূনতম ৪৮ ঘণ্টার জন্য সে দেশে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও দুই বিমানের পাইলট ও বিমানসেবিকারা অনুমতি পান।
সূত্রের খবর, আটকে পড়া যাত্রীদের মধ্যে অনেক মহিলা রয়েছেন। আছে বেশ কিছু শিশুও। কেন ঢাকার আবহাওয়া ভাল
হওয়ার পরেও তাঁরা সেখানে যেতে পারছেন না, কেন তাঁদের কলকাতায় আটকে থাকতে হচ্ছে, তা-ও তাঁদের বোঝানো হয়।